ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

শিশু সাঈদ হত্যা মামলা : ৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

প্রকাশিত: ০২:০৮ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০১৫

সিলেটে শিশু আবু সাইদ হত্যা মামলায় মরদেহের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক, মামলার প্রথম দিকের তদন্ত কর্মকর্তাসহ আরও তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর এই মামলায় ২৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হলো।

বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো.আব্দুর রশিদ আসামিদের উপস্থিতিতে তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। আগামিকাল বৃহস্পতিবার ফের সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।  

সাক্ষ্য প্রদানকারীরা হচ্ছেন, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসি বিভাগের প্রভাষক ও সাঈদের পোস্ট মর্টেমকারী চিকিৎসক মো. সামছুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান ও সাঈদ হত্যা মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ ফজলে আজিম পাটওয়ারী।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল মালেক জাগো নিউজকে জানান, এ নিয়ে এই আলোচিত মামলায় ৩৭ সাক্ষীর মধ্যে গতকাল বুধবার পর্যন্ত ২৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হলো।

বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানা পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসাইন ও কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তারেক মো মাসুদের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে আলোচিত এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হবে। তিনি জানান, সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে চলতি মাসেই রায় ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌসলি ডা. মো. সামছুল ইসলাম, মো. আসাদুজ্জামন, এসআই শাহ ফজলে আজিম পাটওয়ারী, এসআই তারেক মো. মাসুদ ও ওসি (তদন্ত) মো. মোশারফ হোসেনের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আদালতে হাজিরা দেন।

দুপুর ১২টা পর্যন্ত টানা দুজনের সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। এরপর আদালত অন্য মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করেন এবং দুপুর একটা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত পুনরায় আরও একজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

সাক্ষ্যগ্রহণকালে আলোচিত এই হত্যা মামলার আসামি এসএমপির এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ কনস্টেবল (বরখাস্ত) এবাদুর রহমান পুতুল, র্যাব ও পুলিশের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা, সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম রাকিব ও প্রচার সম্পাদক মুহিবুর রহমান ওরফে মাহি হোসেন মাসুম আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিতি ছিলেন।

এর আগে গত ২৪ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন, সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (আমলী-১) মো. সাহেদুল করিম, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেট (আমলী-২) মোচ্ছা. ফারহানা ইয়াসমিন, সিলেট সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক শামিমুর রহমান পীর ও আসামি এবাদুর রহমান পুতুলের সঠিক নাম-ঠিকানা যাচাইকারী এএসআই রতন লাল দেব।

২৩ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন, মো. সেলিম আহমদ, মো. আজির উদ্দিন, আবুল হোসেন, আব্দুস কুদ্দুস, মোক্তাদির আহমদ, দেলোয়ার হোসেন ও আব্দুল আহাদ তারেক। ২২ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন, সাঈদের মা সালেহা বেগম, সাঈদের আরেক মামা জয়নাল আবেদীন, তার শ্যালক সৈয়দ হিলাল, এয়ারপোর্ট থানার ওসি গৌছুল হোসেন, এসআই সমরাজ মিয়া ও কনস্টেবল কাশেম।

১৯ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন, সাঈদের বাবা মতিন মিয়া, মামা আশরাফুজ্জামান, প্রতিবেশি ফিরোজ আহমদ, ওলিউর রহমান ও শফিকুল ইসলাম।

গত ১৭ নভেম্বর পুলিশের এক কনস্টেবলসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রশীদ।

এর আগে গত ২৯ অক্টোবর সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সাহেদুল করিম চার্জশিট আমলে নিয়ে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নথিপত্র স্থানান্তর করেন।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) আবদুল আহাদ চৌধুরী। এর আগের দিন ২২ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার ভাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মোশাররফ হোসাইন এসি প্রসিকিউশনের কাছে মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) হস্তান্তর করেন।
 
গত ১১ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর রায়নগর থেকে স্কুলছাত্র আবু সাঈদকে (৯) অপহরণ করা হয়। পরবর্তীতে ১৩ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুলের কুমারপাড়াস্থ ঝরনারপাড় সবুজ-৩৭ বাসার ছাদের চিলেকোঠা একটি ঘর থেকে আবু সাঈদের অর্ধগলিত মরদেহ সাতটি পলিথিনের বস্তার মধ্যে মোড়ানো অবস্থায়  উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় এয়ারপোর্ট থানার কনস্টেবল এবাদুর, পুলিশের সোর্স গেদা ও ওলামা লীগ নেতা রাকিবকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর এই তিনজনই ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

নিহত আবু সাঈদ নগরের রায়নগর শাহমীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ও রায়নগর দর্জিবন্দ বসুন্ধরা ৭৪ নম্বর বাসার আব্দুল মতিনের ছেলে। মতিনের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার খাশিলা গ্রামে।
    
ছামির মাহমুদ/এমজেড/পিআর