ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ছুটি না দেয়ার ক্ষোভে আত্মহত্যা করেন এসআই হাসান, দাবি পরিবারের

জেলা প্রতিনিধি | যশোর, পাবনা | প্রকাশিত: ০৫:৫১ পিএম, ২৩ মার্চ ২০২১

ছুটি না পেয়ে ক্ষোভে পাবনার আতাইকুলা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসান আলী আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন তার বাবা। তবে পুলিশ বলছে, ছুটি নয় অন্য কোনো কারণে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। এর জন্য তদন্ত চলছে।

যশোরের কেশবপুর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গায় গ্রামের ভ্যানচালক জব্বার আলীর ছেলে হাসান আলী (২৮)। ৩৭তম আউটসাইট ক্যাডেট হিসেবে গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন তিনি। এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পাবনার আতাইকুলায় থানায় এসআই হিসেবে যোগদান করেন।

রোববার (২১ মার্চ) সকালে আতাইকুলা থানার ছাদে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসান আলির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তার ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়। পরদিন সোমবার (২২ মার্চ) যশোরের কেশবপুর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গায় গ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

মৃত হাসান আলীর বাবা জব্বার আলী বলেন, ‘আমার এক মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে মুক্তা খাতুনের বিয়ে হয়েছে কয়রা উপজেলায়। কত স্বপ্ন ছিল অভাবের সংসারে। অনেক কষ্ট করে ছেলেকে মানুষ করেছি। অত্যন্ত মেধাবী হওয়ায় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তার লেখাপড়া শেষ হয়। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া করে নিজের যোগ্যতায় পুলিশের এসআই পদে চাকরি পায়। ট্রেনিং শেষে গত বছর পাবনার আতাইকুলা থানায় যোগ দেয়।’

তার দাবি, হাসান খুব চাপা স্বভাবের ছিল। মানসিকভাবে অনেক চাপ নিলেও সে কখনো কাউকে কিছু বলত না। কয়েক দিন ধরে তার কিছুটা মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল।

jagonews24

কান্নাজড়িত কণ্ঠে জব্বার আলী বলেন, ‘বুধবার হাসান আমার সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলে। হাসান আমাকে জানায় ৪১তম বিসিএস পরীক্ষা দিতে শুক্রবার খুলনায় আসবে। কিন্তু থানার ওসি তাকে ছুটি দিবে না। এ নিয়ে ওসির সঙ্গে হাসানের বাকবিতণ্ডা হয়। ছুটি না দেয়ার ক্ষোভে আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে।’

এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন জব্বার আলী।

এ বিষয়ে পাবনার আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান আলী বিসিএস পরীক্ষা দেয়ার জন্য ছুটি চাননি। এমনকি তিনি যে বিসিএস পরীক্ষা দেবেন এমন কথাও তাকে কখনো জানাননি। এসআই হাসানের রুমমেট ও সহকর্মী দু’জনও তাকে বিসিএস প্রস্তুতি নিতে দেখেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কর্মরত অবস্থায় বিসিএস পরীক্ষা দিলে তো তিনি বিভাগীয় মাধ্যমেই দিতেন। এক্ষেত্রে বিভাগীয়ভাবেই তার ছুটি মঞ্জুর হত। তার আত্মহত্যার কারণ অন্য কিছু হতে পারে। যেটির তদন্ত হচ্ছে। তবে বিসিএস এর জন্য ছুটি দেয়া বা না দেয়ার জন্য হয়নি।’

এ ব্যাপারে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম (অপরাধ) বলেন, ‘এসআই হাসান কীভাবে বা কী কারণে আত্মহত্যা করেছেন তার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে। ছুটি না দেয়ার জন্য তিনি আত্মহত্যা করেছেন এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অবিশ্বাস্য। নিহতের স্বজনদের আবেগী কোনো কথাকে অতিরঞ্জিত করছে কোনো কোনো মিডিয়া। যেটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

তিনি আরও বলেন, ‘এসআই হাসানের আত্মহত্যা রহস্য উদঘাটনে তার ডায়েরি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সেখান থেকে ক্লু বের করার চেষ্টা চলছে।’

হাবিবুর রহমান মিলন/আমিন ইসলাম/এসজে/জিকেএস