শিশু সাঈদ হত্যায় সাক্ষ্য দিলেন আরো ৭ জন
সিলেটে শিশু আবু সাঈদ হত্যা মামলায় টানা তৃতীয় দিনে আদালতে আরো সাতজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আব্দুর রশিদ এ সাক্ষ্যগ্রহণ গ্রহণ করেন।
সাক্ষ্য প্রদানকারীরা হলেন, মো. সেলিম আহমদ, মো. আজির উদ্দিন, আবুল হোসেন, আব্দুস কুদ্দুস, মোক্তাদির আহমদ, দেলোয়ার হোসেন ও আব্দুল আহাদ তারেক।
এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় ৩৭ সাক্ষীর মধ্যে সোমবার পর্যন্ত ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার ফের সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছে আদালত।
এর আগে গত ১৯ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন সাঈদের পিতা ও মামলার বাদী মতিন মিয়া, মামা আশরাফুজ্জামান, প্রতিবেশি ফিরোজ আহমদ, ওলিউর রহমান ও শফিকুল ইসলাম।
গত রোববার সাক্ষ্য দেন, সাঈদের মা সালেহা বেগম, সাঈদের আরেক মামা জয়নাল আবেদীন, এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেন, এসআই সমরাজ মিয়া ও পুলিশ কনেস্টেবল কাশেমসহ ছয়জন।
মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ৯টায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক থাকা চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। এরা হলেন, এসএমপির এয়ারপোর্ট থানার কনস্টেবল (বরখাস্তকৃত) এবাদুর রহমান পুতুল, সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম রাকিব ও প্রচার সম্পাদক মুহিবুর রহমান ওরফে মহি হোসেন মাছুম এবং র্যাব ও পুলিশের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা। আসামিদের উপস্থিতিতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়।
সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের পিপি আব্দুল মালেক জাগো নিউজকে জানান, সকাল সােড় ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত আদালত সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন। মঙ্গলবার আবারো সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
গত ১৭ নভেম্বর পুলিশের এক কনস্টেবলসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রশীদ।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সাহেদুল করিম চার্জশিট আমলে নিয়ে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নথিপত্র স্থানান্তর করেন।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) আবদুল আহাদ চৌধুরী। এর আগের দিন ২২ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মোশাররফ হোসাইন এসি প্রসিকিউশনের কাছে মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) হস্তান্তর করেন।
গত ১১ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর রায়নগর থেকে স্কুলছাত্র আবু সাঈদকে (৯) অপহরণ করা হয়। পরবর্তীতে ১৩ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুলের কুমারপাড়াস্থ ঝরনারপাড় সবুজ-৩৭ বাসার ছাদের চিলেকোঠা একটি ঘর থেকে আবু সাঈদের অর্ধগলিত মরদেহ সাতটি পলিথিনের বস্তার মধ্যে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় এয়ারপোর্ট থানার কনস্টেবল এবাদুর, পুলিশের সোর্স গেদা ও ওলামা লীগ নেতা রাকিবকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর এই তিনজনই ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
নিহত আবু সাঈদ নগরের রায়নগর শাহমীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ও রায়নগর দর্জিবন্দ বসুন্ধরা ৭৪ নম্বর বাসার আব্দুল মতিনের ছেলে। মতিনের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার খাশিলা গ্রামে।
ছামির মাহমুদ/এআরএ/পিআর