দূষণে জৌলুস হারাচ্ছে শীতলক্ষ্যা
এক সময়ে শীতলক্ষ্যার পানি পান করতো মানুষ। এ নদীতে মাছ ধরে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করতো। তবে সময়ের পরিক্রমায় সব কিছুই পাল্টে গেছে। পানি পান তো দূরের কথা, এখন শীতলক্ষ্যায় মাছ পাওয়াও দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কারণ হিসেবে জানা গেছে দূষণ। দূষণের কবলে পড়ে জৌলুস হারাচ্ছে ১০৮ কিলোমিটারের শীতলক্ষ্যা নদী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শীতলক্ষ্যা নদীর তীরঘেঁষে চারশরও বেশি তরল বর্জ্য নির্গমনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে বর্জ্য শোধনাগার রয়েছে ৩১০ প্রতিষ্ঠানের। কয়েকেটি প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য শোধনাগার থাকলেও সেগুলো ব্যবহার হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে শীতলক্ষ্যায় দূষণ বেড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর পানিতে উৎকট দুর্গন্ধ। পানিও অনেক কালো।
নদীর পাড়ে প্রায়ই সাইক্লিং করতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শাহাদাত হোসেন। পরিবার নিয়ে বাস করেন মিজমিজি এলাকায়। তিনি বলেন, স্কুল জীবনে নদীর পাড়ে অনেক সময় আসতাম। তখন নৌভ্রমণ ও নদীতে গোসল করতাম। এখন কলকারখানা বেড়ে যাওয়ায় দূষণও বেড়েছে। দুর্গন্ধের কারণে এখন আর নৌকা নিয়ে নদীতে ঘুরতে পারি না।
রেজাউল করিম ৪০ বছর ধরে বসবাস করেন সিদ্ধিরগঞ্জের আটিগ্রামে। তিনি নদীর পাড়ে দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি জানান, প্রায় ৩০ বছর আগে নদীর পানি ভালো ছিল। তখন মানুষ গোসল করতো, মাছ ধরতো। কিন্তু পানিতে ময়লা থাকায় এখন আর সেই দৃশ্য দেখা যায় না।
তার সঙ্গে থাকা পাইনাদী এলাকার বাসিন্দা শরীফুল ইসলাম তনয় বলেন, বিগত ১৩-১৪ বছর আগে নদীর পাড়ের মাঠে খেলতে এলে দেখতাম মানুষ মাছ ধরছে। কিন্তু দূষণের কারণে এখন মানুষ মাছ ধরতে পারে না।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবদুল্লাহ-আল মামুন বলেন, শীতলক্ষ্যা তীরবর্তী ১০০টির মতো শিল্প কারখানায় বর্জ্য শোধনাগার নেই। এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইটিপি (শোধনাগার) করার ব্যাপারে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে বর্জ্য শোধনাগার থাকলেও সংশ্লিষ্টরা তা ব্যবহার করে না। ফলে নদীদূষণ হচ্ছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হয়।
এএইচ/এমকেএইচ