তামাক চাষিদের অনশন, নেপথ্যে কারা?
মেহেরপুরে অনশন করেছে দেশীয় তামাক চাষি কল্যাণ সমিতির সদস্যরা। তবে এই অনশনের নেপথ্যে টোব্যাকোর একটি কোম্পানির হাত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা নিজেদের কিছু চাষিদের নিয়ে ব্যানার তৈরি করে এ অনশন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সামনে অনশনের আয়োজন করে চাষি কল্যাণ সমিতি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তাদের ব্যানার ফেস্টুন ও ডেকোরেশন করে দিয়েছে আবুল খায়ের টোব্যাকো। এই নাটকীয় অনশন ভঙ্গ করতে ব্যবহার করা হয়েছে জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদেরও।
সরেজমিনে অনশনরত দেশীয় তামাক চাষি কল্যাণ সমিতির মেহেরপুর সভাপতি আলমগীর হোসেন সেন্টুর কাছে তাদের দাবিগুলো জানতে চাইলে তিনি আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির দেয়া লিফলেট দেখে দাবির কথা বলেন। তাদের কারও কোনো কোম্পানির কার্ড নেই, তাই তারা অনশন করছেন।
অপরদিকে, সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক সেন্টু বলেন, বিদেশি কোম্পানি বিএটিবি আমাদের তামাক কিনে না তাই আমরা সাধারণ তামাক চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। দেশীয় তামাক কোম্পানি রক্ষার জন্য দেশীয় কোম্পানির ওপর কর কমাতে হবে। বিদেশি তামাক কোম্পানির ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করতে হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনশনের আগে থেকেই আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ স্থানীয় প্রতিনিধিদের সরব উপস্থিতি ছিল অনশনের শেষ পর্যন্ত। সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক সেন্টু একজন তামাক ব্যবসায়ী, এছাড়াও অনশনরত প্রায় সবাই আবুল খায়ের টোব্যাকোর নিবন্ধিত চাষি।
আবুল খায়ের টোব্যাকোর ফিল্ড অফিসার গাংনী উপজেলার আকুবপুর গ্রামের মহিবুল ইসলাম চাষি সেজে তদারকি করছিলেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত চাষিদের। চাষিদের অনশন ভাঙতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ খালেক এবং গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী ঘটনাস্থলে যান। এ সময় কোম্পানির প্রতিনিধিদের দেয়া জুস ও পানি দিয়ে চাষিদের অনশন ভাঙেন। শেষে আবুল খায়ের টোব্যাকো চাষিদের জন্য প্যাকেট খাবার ও পানি সরবরাহ করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ খালেক জানান, আবুল খায়ের টোব্যাকোর লোকজন ও চাষিরা ফোন দিয়েছিল, তাই গিয়েছিলাম।
মোবাইল ফেনে আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির লজস্টিক ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনশনে তামাক চাষিরা তাদের দাবি তুলে ধরেছে।
অনশনে তাদের কোম্পানির সহযোগিতা ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি এসব বিষয়ে কিছু জানে না বলেই ফোন রেখে দেন।
আসিফ ইকবাল/এসজে/এমএস