শিশু সাঈদ হত্যা : দ্বিতীয় দিনে সাক্ষ্য দিচ্ছেন ১১ জন
সিলেটে শিশু আবু সাঈদ হত্যা মামলায় দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। রোববার আরও ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে আসামিদের উপস্থিতিতে সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রশিদ সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত দু’জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এরা হলেন- শিশু সাঈদের মামা জয়নাল আবেদীন ও সৈয়দ দিলাল আহমদ। এছাড়া আজ সাক্ষ্য দেয়ার জন্য আদালতে হাজির রয়েছেন- সাঈদের মা সালেহা বেগম, এসএমপির এয়ারপোর্ট থানার ওসি গৌছুল আলম, পুলিশ কনস্টেবল আবুল কাসেম, প্রতিবেশী আবদুল আহাদ তারেক, সেলিম আহমদ, দেলোয়ার হোসেন, আবদুল কদ্দুস, সফররাজ মিয়া, মুক্তাদীর আহমদ জুয়েল।
মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ উপলক্ষে সকালে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক থাকা ৪ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ।
এরা হলেন- এসএমপির এয়ারপোর্ট থানার কনস্টেবল (বরখাস্তকৃত) এবাদুর রহমান পুতুল, সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম রাকিব ও প্রচার সম্পাদক মুহিবুর রহমান ওরফে মহি হোসেন মাছুম এবং র্যাব ও পুলিশের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা।
এর গত ১৯ নভেম্বর দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা ৫ ঘণ্টায় আবু সাইদের বাবা ও মামলার বাদী আবদুল মতিন এবং তার মামাসহ ৫ জন সাক্ষ্য দেন। আলোচিত এই মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করার কথা রয়েছে।
সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের পিপি আব্দুল মালেক জাগো নিউজকে জানান, সকাল থেকে আদালত সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ সাক্ষ্য দেয়ার জন্য শিশু সাঈদের মাসহ ১১জন আদালতে হাজির আছেন। এ পর্যন্ত তৃতীয় সাক্ষীর সাক্ষ্য নিচ্ছেন আদালত। বিকেল পর্যন্ত সাক্ষ্য নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
গত ১৭ নভেম্বর পুলিশের এক কনস্টেবলসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রশীদ। এর আগে গত ২৯ অক্টোবর সিলেটের মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সাহেদুল করিম চার্জশিট আমলে নিয়ে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নথিপত্র স্থানান্তর করেন।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর সিলেট মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) আবদুল আহাদ চৌধুরী। এর আগের দিন ২২ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মোশাররফ হোসাইন এসি প্রসিকিউশনের কাছে মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) হস্তান্তর করেন।
গত ১১ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর রায়নগর থেকে স্কুলছাত্র আবু সাঈদকে (৯) অপহরণ করা হয়। পরবর্তীতে ১৩ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুলের কুমারপাড়াস্থ ঝরনারপাড় সবুজ-৩৭ বাসার ছাদের চিলেকোঠার একটি ঘর থেকে আবু সাঈদের অর্ধগলিত মরদেহ সাতটি পলিথিনের বস্তার মধ্যে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় এয়ারপোর্ট থানার কনস্টেবল এবাদুর, পুলিশের সোর্স গেদা ও ওলামা লীগ নেতা রাকিবকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর এই তিনজনই ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
ছামির মাহমুদ/এসএস/এমএস