বহুতল এক ভবন নির্মাণে ১৫ বাড়িতে বড় ফাটল
খুলনায় নির্মাণাধীন ১৫তলা বিশিষ্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কনভেনশন সেন্টার স্থাপনার কারণে পার্শ্ববর্তী অন্তত ১৫টি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না নেয়ার কারণেই ভবনগুলো ধসের আশঙ্কায় রয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিকরা।
শনিবার খুলনা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন ক্ষতিগ্রস্ত নগরীর ২ নম্বর মির্জাপুর রোডের বাসিন্দা জিএম আব্দুস সাত্তার। তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাহনাজ পারভীন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, নগরীর মির্জাপুর এলাকায় সামছুর রহমান রোডে দুটি বেজমেন্টে খুলনা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কনভেনশন সেন্টারের ১৫তলা বিশিষ্ট স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে। আমরা আশা করেছিলাম, ভবনটি নির্মাণের ক্ষেত্রে আশপাশের ভবনে যেন কোনোরূপ ক্ষয়ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সতর্কতা ও সুবিবেচনার সঙ্গে কাজ করবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক তারা কোনো প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা নেয়নি। যে কারণে পাইলিং করার সময় সৃষ্ট কম্পন ও শব্দে আমরা ভীত হয়ে পড়ি।
পরবর্তীতে নির্মাণাধীন ভবন সংলগ্ন বাড়িগুলোতে বড় বড় ফাটলের সৃষ্টি হয়। যার কারণে ভবনের উত্তর ও দক্ষিণ দিকের বসবাসকারী পরিবারগুলো অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে।
প্রথম দফায় পাইলিংয়ের কাজ শেষ হলে নির্মাণাধীন ভবনের উত্তর দিকের বাসিন্দা জিএম আব্দুস সাত্তার প্রায় ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িটি সংস্কার করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে চলমান এই ভবন নির্মাণ কাজের জন্য সংস্কারকৃত বাড়িটিতে পুনরায় ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। যা পূর্বের তুলনায় আরও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। যেকোনো সময় বাড়িটি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, এ ভবনটি নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঢাকার বনানীর চেয়ারম্যান গলির ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারস লিমিটেড। আবাসিক বাড়ির মালিক হিসেবে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কয়েকবারই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পত্র দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। তবে কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি।
এ বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধি ও সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা ক্ষতিপূরণ না দেয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের অজুহাত দেখায় যা বাস্তবসম্মত নয় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
ইতোমধ্যে বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ ও প্রতিকার চেয়ে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, সিটি মেয়র, পুলিশ কমিশনার, কেডিএ চেয়ারম্যান, প্রকল্প পরিচালক ও স্থানীয় কাউন্সিলরসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে। তারপরও কোনো সুরাহা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি খুলনা সদর থানায় সাধারণ ডায়রি করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত জিএম আব্দুস সাত্তার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আব্দুল হাই, এজাজ আহমেদ, সিরাজউদ্দিন, তারিকুল ইসলাম, মো. আরিফুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান প্রমুখ।
আলমগীর হান্নান/এফএ/জিকেএস