ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কেন্দ্র চূড়ান্ত, খুলনায় টিকা যাবে ৩১ জানুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক | খুলনা | প্রকাশিত: ০৩:০৩ পিএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২১

খুলনায় করোনাভাইরাসের টিকা সংরক্ষণ, কেন্দ্র নির্ধারণ, কর্মীদের প্রশিক্ষণসহ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সব ধরনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে। টিকাগুলো জেলায় পৌঁছাবে ৩১ জানুয়ারি। আর প্রদান শুরু হবে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে।

ইতোমধ্যে প্রথমধাপে যারা টিকা পাবেন তাদের প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে এজন্য অবশ্যই অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। টিকা নেয়ার পরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সমাধানের জন্য জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন ও উপজেলার আলাদা কমিটি বিষয়টির দেখভাল করবে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভীতি দূর করতে স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাউন্সেলিং এবং সমাবেশ করা হচ্ছে।

খুলনা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার জন্য বরাদ্দ হওয়া টিকা গ্রহণ করা হবে ৩১ জানুয়ারি। এজন্য জেলা সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদকে সভাপতি করে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। টিকা সংরক্ষণে ৩০টি আইএলআর (সংরক্ষণের জন্য হিমায়িত বক্স) প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এর মধ্যে নগরীর স্কুল হেলথ ক্লিনিকে ১৩টি ও নয়টি উপজেলায় ১৭টি আইএলআরে টিকা সংরক্ষণ করা হবে। এগুলোর প্রতিটিতে ৭ হাজার করে টিকা রাখা যাবে। সংরক্ষণাগারের তাপমাত্রা ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে জাতীয় গ্রিডের সংযোগের পাশাপাশি রাখা হয়েছে জেনারেটরের ব্যবস্থা। এছাড়া যুক্ত করা হয়েছে বিদ্যুতের দুটি ফেসও।

প্রথমধাপে নগরীর সদর হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, পুলিশ হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, বিজিবি হাসপাতাল, তালতলা হাসপাতাল এবং লাল হাসপাতালে এ টিকা দেয়া হবে। আর উপজেলা পর্যায়ে টিকা দেয়া হবে সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

প্রতিটি টিকাদানকারী টিমে দুজন টিকা প্রয়োগকারী ও ৪ জন স্বেচ্ছাসেবী থাকবেন। এ কাজে নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, নগরের টিকাদান কর্মসূচির কার্যক্রম পরিচালনা করবে খুলনা সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ। এজন্য সিটি করপোরেশনের মেয়রকে সভাপতি ও সংস্থার চিফ মেডিকেল অফিসারকে সদস্য সচিব করে ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এছাড়া, স্থানীয় পর্যায়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা, উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) সভাপতি এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন সহকারী কমিশনার (ভূমি), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), পৌরসভার মেয়র (পৌরসভা থাকলে), উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, আইসিটি অধিদফতরের সহকারী প্রোগ্রামার, দুজন গণ্যমান্য ব্যক্তি (ইউএনও মনোনীত), স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কাজ করে এমন দুটি এনজিওর প্রতিনিধি (ইউএনও মনোনীত)।

খুলনা জেলায় ৯৭ হাজার ২৩০ জনকে অগ্রাধিকার বিবেচনায় প্রথমধাপে টিকা দেয়া হবে। প্রথমে খুলনা সিটি করপোরেশন ও দুটি পৌরসভার ১ হাজার ৬৯০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী পাচ্ছেন এই টিকা। এছাড়া, ওই তালিকায় জেলায় কর্মরত ৩০ হাজার ৬০৬ জন সরকারি কর্মচারী, ৪ হাজার ১৩০ জন সরকারি হাসপাতালে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী, বেসরকারি হাসপাতালের ৮ হাজার ১০১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ সদস্য ১ হাজার ৮৫৯ জন, আনসার ও ভিডিপির সদস্য ৮ হাজার ৯৯৩ জন, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৫৪৮ জন, বিজিবি সদস্য ৪১৩ জন রয়েছেন।

এছাড়া, তালিকায় রয়েছেন জেলা পরিষদের ২৯৫ জন, উপজেলা পরিষদের ১ হাজার ৯১ জন এবং ইউনিয়ন পরিষদের ১ হাজার ২৭৩ জন কর্মী। শিক্ষা বিভাগের সরকারি প্রতিষ্ঠানের ১৬ হাজার ৭৮৪ কর্মী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ২০ হাজার ৯০০ জন প্রথম ধাপে টিকা পাবেন।

প্রথম ধাপে খুলনায় কর্মরত ৫৪৭ জন গণমাধ্যমকর্মীও এই টিকা পাচ্ছেন।

তবে ১৮ বছরের নিচের শিশু, গর্ভবতী নারী, স্তন্যদানকারী মা ও মুমূর্ষু রোগীদেরকে এই টিকা পাবেন না। এছাড়া যারা টিকা নিতে অনিচ্ছুক ব্যক্তিদেরও টিকা দেয়া হবে না।

টিকা পেতে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ।

তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে টিকা নিয়ে নানা রকমের ভয়ভীতি রয়েছে। এজন্য উৎসাহ দিতে উপজেলা কমিটিসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি যেয়ে কাউন্সেলিং করছেন। সমাবেশের পাশাপাশি স্থানীয় ক্যাবল টিভিতেও প্রচার করা হচ্ছে বিষয়টি।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. সাদিয়া মনোয়ারা উষা বলেন, ‘৩১ তারিখে প্রথম টিকার চালান আমাদের হাতে আসবে। দেশে মহামারি শুরুর দীর্ঘ ১০ মাস পরে ভ্যাকসিন আসছে এটি অত্যন্ত আনন্দের সংবাদ।’

তিনি আরও বলেন, ‘টিকা দেয়ার পর টিকার স্থান ফুলে যাওয়া, হালকা জ্বর ভাব ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তবে ভয়ের কোনো কারণ নাই। যেকোনো উপসর্গ দেখা দিলেই আমাদের জানাতে হবে।’

আলমগীর হান্নান/এসএস/এমএস