ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

শুধু মৌখিক নয়, ফেসবুকেও চলছে নির্বাচনী প্রচারণা

প্রকাশিত: ০৭:১২ এএম, ১৭ নভেম্বর ২০১৫

লালমনিরহাট জেলায় দুটি পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে চলছে মেয়র পদে প্রার্থী হবার দৌড়ঝাঁপ। তফশিল ঘোষণার আগেই ব্যানার-ফেস্টুন আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিকল্পিত পৌরসভা গড়তে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে দোয়া চাইছেন প্রার্থীরা। আর জনসমর্থন বাড়াতে মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে গিয়ে রীতিমতো জনসংযোগে নেমেছেন সম্ভব্য প্রার্থীরা।

লালমনিরহাট পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ৪১ হাজার ৯শ ৬২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২০ হাজার ৮শ ৭৪ জন ও নারী ২১ হাজার ৮৮ জন ভোটার। অপরদিকে পাটগ্রাম মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ৭শ ৯১ জন।

পৌরসভা নির্বাচনের ঘনিয়ে আসায় প্রচারণায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট ও পাটগ্রাম পৌরসভার সম্ভাব্য প্রার্থীরা। প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের ঘোষণা দেয়ায় দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে নিজ নিজ দলের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের পিছু ছুটছেন মেয়র প্রার্থীরা। ইতোমধ্যে নিজ দলের নেতা-নেত্রীর ছবি সম্বলিত শুভেচ্ছা বোর্ডে ছেয়ে গেছে গোটা পৌর এলাকা। বিভিন্ন অজুহাতে ভোটারদের কাছে গিয়ে নিজের ইস্তেহার তুলে ধরে শুভেচ্ছা বিনিময় করে দোয়া চাচ্ছেন প্রার্থীরা।

চায়ের দোকান, হোটেল-রেঁস্তোরা, পথ-ঘাট সর্বত্রই প্রার্থীদের আলোচনা সমালোচনায় সরগরম হয়েছে উঠেছে। থেমে নেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। ফেসবুকেও প্রার্থীরা শুভেচ্ছা জানিয়ে দোয়া প্রার্থী হচ্ছেন।
তাই আলোচনায় উঠে আসছেন প্রথম শ্রেণির লালমনিরহাট ও পাটগ্রাম পৌরসভার সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের নাম ও দলীয় অবস্থান। কে কোন দলের মনোনায়ন পাচ্ছেন তা নিয়ে চলছে চুলচেড়া বিশ্লেষণ।

লালমনিরহাট পৌরসভা : লালমনিরহাট পৌরসভার বর্তমান মেয়র রিয়াজুল ইসলাম রিন্টু আওয়ামী লীগ পন্থী। রিয়াজুল ইসলাম রিন্টুর আগে সাবেক মেয়র মোশারফ হোসেন রানা ছিলেন। এবার নির্বাচনে এই দুজনের সঙ্গে একঝাঁক নতুন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। লালমনিরহাট পৌরসভার মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সাত, বিএনপির দুই, জাতীয় পার্টি থেকে দুই, স্বতন্ত্র প্রার্থী একজন। সবাই পৌরসভার মেয়র প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন,  জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান মেয়র রিয়াজুল ইসলাম রিন্টু, বর্তমান প্যানেল মেয়র জেলা যুবলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এসএম ওয়াহিদুল ইসলাম সেনা, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট বাদল আশরাফ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী নজরুল ইসলাম তপন, জেলা যুবলীগের কোষাধ্যক্ষ রেজাউল করিম স্বপন।

বর্তমান মেয়র রিয়াজুল ইসলাম রিন্টু জাগো নিউজকে জানান, এর আগেও তার মরহুম বাবা মকবুল হোসেন লালমনিরহাট পৌরসভার জনপ্রিয় মেয়র ছিলেন। তার সন্তান হিসেবে তিনি তার যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে গত ৫ বছর পৌরসভার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তিনি আরও জানান ৯টি ওয়ার্ডে ১৪ কোটি টাকা নগর উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। আমি উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করতে চাই। জনগণ আমাকে নির্বাচিত করবেন।

আমাদের পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সৃষ্টিলগ্ন থেকেই জড়িত। সে কারণে তিনি আওয়ামী লীগের সমর্থন পাবেন বলে দাবি করেন।

ক্ষমতাসীন দলে অভ্যন্তরীণ কলহ থাকায় তাদের প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা। তাদের মতে, জেলা আওয়ামী লীগ একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হওয়ায় প্রতিটি গ্রুপ থেকে এক বা একাধিক প্রার্থী হবার ঘোষণায় চরম বিপাকে পড়েছেন দলীয় সাধারণ নেতাকর্মীরা। দলীয় মনোনায়ন পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রত্যশা ব্যক্ত করেছেন অনেক প্রার্থী।

বিএনপি থেকে সম্ভব প্রার্থী হতে পারেন জেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলা ও জেলা যুবদলের সভাপতি আব্দুল হালিম প্রার্থী হবেন বলে নেতাকর্মীরা জানান।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলা জাগো নিউজকে বলেন, বিএনপি একটি সুশৃঙ্খল দল। কেন্দ্রীয় বিএনপির সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কারও সুযোগ নেই। এখানে দল যাকে সমর্থন জানাবে তার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।

জাতীয় পার্টি থেকে দুজন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে পৌর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান ডাবলু  ও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ। দলীয় সমর্থন প্রাপ্ত প্রার্থীর হয়ে কাজ করতে বেশ আগ্রহী জাপার কর্মীরা। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একেএম হুমায়ুন আকতার শিমুলের নাম শোনা যাচ্ছে।   

জামায়াতের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থীর নাম প্রকাশ না হলেও স্বতন্ত্রভাবে একজনকে প্রার্থী করা হবে বলে জামায়াত সূত্রে জানা গেছে।

পাটগ্রাম পৌরসভা : লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম পৌরসভায় দুইবার নির্বাচিত মেয়র শমসের আলীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন, পাটগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম নাজু, সাবেক ছাত্রনেতা ও পাটগ্রাম পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, বর্তমান মেয়র ও পৗর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শমসের আলী, পাটগ্রাম পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলী আহম্মেদ।

পাটগ্রাম পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ জাগো নিউজকে জানান, ছাত্র জীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছি। গত বিএনপি জামায়াত ক্ষমতায় থাকাকালীন কারাবরণ, মামলা, হামলার স্বীকার হতে হয়েছে প্রতিনিয়তই। তাই আমি আওয়ামী লীগের সমর্থন পাবো বলে দাবি করি।

তিনি আরও জানান, দল যাকে মনোনায়ন দেবে তার হয়ে কাজ করবো। দলীয় মনোনায়ন ও নির্বাচিত হলে ডিজিটাল পৌর শহর গড়তে ভূমিকা রাখবো।

বিএনপি থেকে মেয়র প্রার্থী পাটগ্রাম সাবেক সভাপতি ও আহ্বায়ক মোস্তফা সালেউজ্জামান ওপেল ও পৌর বিএনপির সাবেক সম্পাদক ও সদস্য সচিব মোরশেদ আলম শ্যামল।

পাটগ্রাম পৌর বিএনপি সাবেক সম্পাদক ও সদস্য সচিব মোরশেদ আলম শ্যামল জাগো নিউজকে জানান, পৌর বিএনপি তাকে সমর্থন জানাবে আর বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাবো বলে আশা করি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিপুল ভোটে জয়ী হব।

জাতীয় পার্টি থেকে পাটগ্রাম উপজেলার জাপার সাধারণ সম্পাদক কুদরতী এলাহী বাবুল মেয়র প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। জামায়াতের পক্ষ থেকে কোনো প্রার্থীর নাম পাওয়া যায়নি।

এমজেড/পিআর