ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

পাউবোর গড়িমসিতে হুমকিতে ৩ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল

জেলা প্রতিনিধি | নেত্রকোনা | প্রকাশিত: ১০:৫৪ এএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২১

নেত্রকোনার বারহাট্টায় ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে জটিলতার কারণে আগাম বন্যার হুমকিতে পড়েছে প্রায় দুই হাজার একর জমির ফসল। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর একাধিকবার চিঠি দিলেও আমলে নিচ্ছেন না নেত্রকোনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা।

নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের কংস নদীর তীরবর্তী প্রায় দুই হাজার একর জমির ফসল গত বছরও নষ্ট হয়েছে।

এর আগে ২০১৯ সালে বাঁধ নির্মাণের কারণে রক্ষা পায় ওই ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামের ৩০ হাজার একর জমির উঠতি বোরো ফসল। কিন্ত গত বছর বাঁধ নির্মাণ না করায় আগাম বন্যায় কংস নদীর পাড় ডুবে ক্ষতি হয় কর্ণপুর, বাট্টাপাড়া, পাইকপাড়া, লামাপাড়া, চরপাড়া, বাড়িতাতিয়র, লামাপাড়া, পালপাড়াসহ ১৫টি গ্রামের বোরো ফসলের।

এবছরও স্থানীয় কৃষি অফিস ও ভুক্তভোগী কৃষকরা নিয়মনুযায়ী বারবার লিখিতভাবে বিষয়টি জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।

কর্ণপুর গ্রামের কৃষক আল আমিন, আব্দুল বারেক, পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক তারা মিয়া, বাট্টাপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘কংস নদীর পানিতে মাঠের পর মাঠ ডুবে যায়। আগাম বন্যায় কিংবা পাহাড়ি ঢলে ফসল তলিয়ে যায়। কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল ডুবে যায়। কেউ খবর নেয় না। আমরা বোরো ধান রোপণ করে দুশ্চিন্তায় আছি’।

jagonews24

বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কুতুব উদ্দিন জানান, ‘এলাকাটি কংস নদীর তীরবর্তী। তাছাড়া এলাকাটি খুব নিচু অঞ্চল হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৯ সালে দুইটি প্রকল্পের মাধ্যমে ফসল রক্ষা প্রকল্পের বাঁধ নির্মাণ করে দেয়। ওই বছর কৃষকরা ঠিকমত বোরো ধান ঘরে তোলে। গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বর মাস থেকে বিষয়টি নিয়ে লিখিত আবেদন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা নানা তালবাহানার কারণে হুমকির মুখে পড়ছে এলাকার কয়েকটি গ্রামের মানুষের বোরো ফসল। তাদের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা এখনো কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না’।

রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান রাজু বলেন, ‘সময়মতো পানি উন্নয়ন বোর্ডে ইউনিয়নের তিনটি ফসল রক্ষা বাঁধের জন্য আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু নির্মাণের সময় চলে গেলেও তারা বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। উপজেলা কৃষি অফিস ১৪শ একর জমির ফসল ক্ষতি হবে জানিয়ে লিখিত প্রতিবেদন দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমির ফসল আগাম বন্যার হুমকিতে রয়েছে। এই বাঁধটি না হলে ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ফসল তুলিয়ে গেছে’।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হাবিবুর রহমান বলেন, বারহাট্টার রায়পুর ইউনিয়নের কর্ণপুর গণি মাস্টারের বাড়ি থেকে বাট্টাপাড়া সেতু পর্যন্ত একটি বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজনীয় উল্লেখ করে জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় বিষয়টি অর্ন্তভুক্তির জন্য লিখিত আবেদন করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

নেত্রকোনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত বলেন, প্রথম ধাপের ১০০টি বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আরো ৬৩টি প্রকল্পের কাজ হবে। এই বাঁধটি পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেব।

এইচ এম কামাল/এসএমএম/জেআইএম