ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সমস্যায় জর্জরিত কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

জেলা প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ০৩:০০ এএম, ১৭ নভেম্বর ২০১৫

৫০ শয্যার কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন থেকে নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। ফলে রোগীরা এ হাসপাতাল থেকে কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না।

জানা গেছে, চিকিৎসক সঙ্কটে দীর্ঘদিন যাবৎ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। টেকনিশিয়ান না থাকায় ৫ বছর ধরে হাসপাতালের এক্সরে মেশিন চালু না করায় এখন অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। তাছাড়া হাসপাতালের বিভিন্ন স্থাপনা জরাজীর্ণ হওয়ায় তা যে কোনো মুহূর্তে ধসে পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে। এর মধ্যে আবার হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য তো রয়েছেই।

হাসপাতালে আসা রোগী মরিয়ম বেগম, রাইসুল ইসলাম, গৌতম রায় জাগো নিউজকে জানায়, হাসপাতালে প্রবেশ মুখেই দালালরা রোগীদের জাপটে ধরে। গ্রাম থেকে আসা সহজ-সরল বিধায় আমাদের তাদের প্রতারণার শিকার হতে হয়। হাসপাতালে যন্ত্রপাতি নষ্ট, পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট ভুল আসে ইত্যাদি বলে আমাদের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়।

রোগীরা আরও অভিযোগ করেন, হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন নেই। আধুনিক যন্ত্রপাতিও নেই, যার জন্য চিকিৎসা হয় না। বাধ্য হয়ে দালালদের খপ্পরে পড়ে আমাদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে বে-সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে।

এ সকল বিষয় নিয়ে হাসপাতালের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. বিজয় কৃষ্ণ সাহার সঙ্গে কথা হলে তিনি জাগো নিউজকে জানান, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসন) ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট (এনেসথেসিয়া) এ পদ দু’টি শূন্য থাকায় দীর্ঘদিন থেকে অপারেশন থিয়েটার বন্ধ রয়েছে। পাঁচ বছর যাবত এক্স-রে মেশিন চালানোর টেকনিশিয়ান নেই। এক্সরে মেশিনটিও বিনষ্ট হয়ে পড়ে আছে।

তিনি আরও বলেন, সিনিয়র স্টাফ নার্সের ১৫টি পদের মধ্যে ৫টি পদ শূন্য রয়েছে। নাইট গার্ডেরও দু’টি পদ শূন্য রয়েছে ৫ বছর ধরে। নাইট গার্ড না থাকায় হাসপাতাল থাকছে অরক্ষিত। ৫টি সুপার পদের মধ্যে একটি পদ শূন্য রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ১৯৭৬ সালে নির্মিত হাসপাতাল ভবনের (পূর্বের ৩১ শয্যার হাসপাতাল ভবন) দ্বিতীয় তলার অধিকাংশ কক্ষ জরাজীর্ণ। ছাদের আস্তর খসে পড়ছে। ছাদ চুইয়ে পানি পড়ছে। দেয়ালেও ফাঁটল ধরেছে। বিশেষ করে নৈশকালীন কর্তব্যরত ডাক্তারের শয়ন কক্ষটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ কক্ষের ছাদের আস্তর প্রতিনিয়তই খসে পড়ছে। দেয়ালেও সৃষ্টি  হয়েছে বড় ধরনের ফাঁটল। এ কক্ষের ছাদ ও ওয়াল যে কোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অধিকাংশ আবাসিক কোয়ার্টারে আস্তর খসে পড়ছে। দরজা-জানালাগুলোর ভঙ্গুর অবস্থা। বাসাগুলোর ব্যবহার্য পানির লাইন, কল, বেসিন, টয়লেটের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থায় ত্রুটি, বিদ্যুৎ লাইন বিকল ও ব্যবহারের অনুপযোগী। মাত্র দু’যুগ আগে নির্মিত হয় দু’টি ডক্টরস কোয়ার্টার। এ কোয়ার্টার দুটির কাজ নিম্নমানের হওয়ায় ছাদ ও দেয়ালের আস্তর খসে পড়ছে। কর্মরত বেশিরভাগ কর্মকর্তা ও কর্মচারী আবাসন সমস্যার কারণে হাসপাতাল ক্যাম্পাসের বাইরে বসবাস করেন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. বিজয় কৃষ্ণ সাহা জাগো নিউজকে বলেন, বিরাজমান সমস্যাগুলো উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চাঁদপুরের প্রকৌশলী আলতাফ হোসেন জাগো নিউজকে জানান, ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি কিছু মেরামত কাজ করা হয়েছে মাত্র। এ অর্থবছরে এ পর্যন্ত টেন্ডার আহ্বানের মাধ্যমে কোনো কাজ হয়নি। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের আগে আমি চাঁদপুরের দায়িত্বে ছিলাম না। তাই ওই সময়ের কার্যক্রম আমার জানা নেই।

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন রথিন্দ্র নাথ মজুমদার জাগো নিউজকে জানান, কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিরাজমান সমস্যা আমার জানা আছে। এ সকল সমস্যা দ্রত সমাধানের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

এসএস/এমএস