ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

স্বামী অসুস্থ, প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে রাস্তায় কিসমত আরা

জেলা প্রতিনিধি | রাজশাহী | প্রকাশিত: ০১:৫১ পিএম, ২৩ জানুয়ারি ২০২১

বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী দুই সন্তানের জননী কিসমত আরা বেগম। বয়স ৫৫ না ৬০ ঠিকভাবে বলতে পারেন না। বিলাসবহুল জীবন নয়, শুধু খেয়ে-পরে বেঁচে থাকতে পথে পথে ঘুরছেন এই অসহায় মা। মায়ের সঙ্গী হয়েছেন- প্রতিবন্ধী রাকিব (২৫) ও সাকিব (২৩)।

দুই সন্তান রাকিব ও সাকিবকে ঠিকমতো খেতেও দিতে পারেন না তিনি। তাদের পেটের খিদে মেটাতেই ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নিয়েছেন কিসমত আরা।

বেশিরভাগ সময় থাকেন রাজশাহী নগরীর নিউ মার্কেট এলাকায়। পথের মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে একটু সহানুভূতি কামনা করেন। কখনো কিছু টাকা মেলে, আবার কখনো তাও মেলে না। তবুও সন্তানদের নিয়ে দিনভর পথে পথে ঘোরেন। যেন বাড়িতে ফেরার সময় কিছু চাল, ডাল ও সবজি কিনতে পারেন।

নগরীর দড়িখরবোনা এলাকায় বস্তির ছোট্ট একটা ঘরে দুই সন্তান ও বৃদ্ধ স্বামীকে নিয়ে থাকেন। স্বামী আমিন উদ্দিন মণ্ডলের দ্বিতীয় স্ত্রী তিনি। তাই বয়সের পার্থক্যটাও বেশি। ৯০ অতিক্রম করা আমিন উদ্দিন মণ্ডল একসময় রিকশা চালাতেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে কর্মক্ষমতা হারান। এখন ঘরেই থাকেন। ঠিকমতো চলাফেরাও করতে পারেন না। ফলে সংসারের ভার এখন কিসমত আরার কাঁধে।

Rajshahi-(1).jpg

রাকিব ও সাকিব জন্মের পর থেকেই প্রতিবন্ধী। শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় কোলে, পিঠে অথবা হুইল চেয়ারে টানা ছাড়া উপায় নেই। দুজনের কেউই কথা বলতে পারেন না। তাদের নাওয়া-খাওয়া, প্রসাব-পায়খানা সবই সামলান কিসমত আরা।

ভারাক্রান্ত বদনে কিসমত আরা বেগম জানান, তারা ভেবেছিলেন, ধীরে ধীরে বসতে-হাঁটতে শিখবে। কিন্তু আর হাঁটতে-বসতে পারলো না তারা। কিছুটা বড় হওয়ার পরে কিছুদিন ডাক্তার ও কবিরাজ দেখিয়েছেন। অর্থের অভাবে পরে হাল ছেড়ে দিয়েছেন।

মা কিসমত আরা জানান, কোনো সাহায্য পেলে উপকৃত হতেন তারা। নামমাত্র পাওয়া ভাতা দিয়ে তার সংসার চলে না। সবাই সাহায্য করলে ভালোমত চিকিৎসা করাতে পারতেন বলে জানান তিনি।

কিসমত আরা বলেন, ‘স্বামীও অসুস্থ, অভাবের সংসার। এই পোলা দুইটা নিয়া কি করবো? লোকে খারাপ কথা বুলে, গালি দেয় তাও কিছু বলতে পারি না। কপালে যা জোটে তাই খাই। না জুটলে না খাইয়াই রাতদিন পার হয়।’

এসএমএম/এমএস