ধামরাইয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হলো ১১ অবৈধ ইটভাটা, জরিমানা ৫২ লাখ
ঢাকার ধামরাইয়ে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ১১টি ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে মোট ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদফতর পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ইটভাটাগুলোর বেশিরভাগ অংশ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সোমভাগ ইউনিয়নের ডাউটিয়া ও জয়পুরা এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ আহমেদ। অভিযানে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
পরিবেশ অধিদফতর জানায়, রাজধানীর পাশে ধামরাইয়ে বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটায় দীর্ঘদিন ধরে ইট পোড়ানো হচ্ছে। পরিবেশ দূষণ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকাসহ নানা অভিযোগে আজ এসব ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে স্থানীয় সোমভাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজহার আলীর মালিকানাধীন অবৈধ আমেনা ব্রিকসকে ২০ লাখ, আইরিন ব্রিকসকে ২ লাখ, লাকি ব্রিকসকে ৩ লাখ টাকাসহ পুরো ইটভাটা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়।
এছাড়া সুতিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজার কালামপুর ব্রিকসকে ৫ লাখ টাকাসহ এআরএম ব্রিকসকে ৬ লাখ, এসবি ১ ও ২ ব্রিকসকে ২ লাখ, পদ্মা ব্রিকসকে ৬ লাখ, নুর ব্রিকসকে ১ লাখ, ফারুক ব্রিকসকে ১ লাখ ও হোসেন ব্রিকসকে ৬ লাখসহ মোট ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
জানা গেছে, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ২/৩ ফসল আবাদি কৃষি জমি, আবাসিক এলাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাট বাজার থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার এবং গ্রামীণ বা ইউনিয়ন পরিষদ রাস্তা থেকে অন্তত অর্ধ কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। অথচ রাজধানী ঢাকার অদূরে ধামরাইয়ে এ ধরনের নিয়ম ভঙ্গ করে স্থাপন করা হয়েছে প্রায় ২০০ ইটের ভাটা।
এসব ইটভাটার মালিক পূর্বে নানা কৌশলে ছাড়পত্র পেলেও চলতি বছর পরিবেশ অধিদফতর থেকে কোনো ধরনের ছাড়পত্র পায়নি। চলতি বছর ছাড়পত্র না পেলেও যথারীতি তাদের ইটভাটায় ইট তৈরির কাজ চলছিল।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ আহমেদ বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকার চারপাশের বিভিন্ন জেলায় অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে অভিযান চলছে। এর অংশ হিসেবে আজ ধামরাইয়ে অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আগে ইটভাটার আংশিক ভেঙে দিয়ে বেশি টাকা জরিমানা করা হতো। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কম জরিমানা করে ভাটার কার্যক্রম একেবারেই বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মোসাব্বের হোসেন রাজীব, পরিদর্শক জেসমিন আক্তার, ফাতেমা তুজ জহুরা, র্যাব-৪, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
আল-মামুন/এআরএ/এমএস