করোনা সংকট কেটে মাসে দেড় লাখ ডলারের কাঁকড়া রফতানি
করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর ইউরোপের দেশগুলোতে কাঁকড়ার বাজারে মন্দা শুরু হয়। তবে বছর ঘুরতে সে সংকট কেটে গেছে। ইউরোপের চারটি দেশের বাজার ফিরে পেয়েছেন খুলনার কাঁকড়া চাষীরা। এই চার দেশে প্রতিমাসে গড়ে দেড় লাখ ডলার মূল্যের কাঁকড়া রফতানি হচ্ছে।
মার্চ মাস থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর ইউরোপের দেশগুলো হিমায়িত খাদ্য আমদানি বন্ধ করে দেয়। সে সময় কমপক্ষে ৮০টি অর্ডার বাতিল হয়। এতে সঙ্কটে পড়েন খুলনাঞ্চলের কাঁকড়া চাষ ও প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে জড়িতরা। এরপর ২০ ও ২১ মে আমফানের আঘাতে সাতক্ষীরার শ্যামনগর, খুলনার কয়রা, বাগেরহাটের মোংলায় কাঁকড়ার খামার ভেসে যায়। ফলে চাষীরা চরম দুর্দিনে পড়েন।
তবে সব সঙ্কট কাটিয়ে ২০২০ সালের মে থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডে ৮ লাখ ৯৬ হাজার ৬২৮ ডলার মূল্যের কাঁকড়া রফতানি হয়। এতে কিছুটা হলেও হিমায়িত কাঁকড়া রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বস্তি ফিরে আসে।
এ বিষয়ে সেন্টমার্টিন সি ফুডসের ম্যানেজার প্রবীর চক্রবর্তী বলেন, কাঁকড়ার আবার সুদিন ফিরে এসেছে। ইউরোপের বাজার বন্ধ হলেও জাপানসহ অন্যান্য দেশে গত ৬ মাস ধরে কাঁকড়া রফতানি হচ্ছে। সেই সাথে দক্ষিণাঞ্চলের কাঁকড়ার মোকামগুলো চাঙ্গা হয়েছে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরতা ইউনিয়নের কাঁকড়া চাষি মো. লুৎফর রহমান বলেন, মৌসুমে কাঁকড়া বিক্রি শুরু হতে না হতেই চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় ডিপো মালিকরা কাঁকড়া কেনা বন্ধ রেখেছেন। বড় হয়ে যাওয়া পূর্ণ বয়সের এই কাঁকড়া বেশি দিন খামারে রাখা যায় না। ভরা মৌসুমে কাঁকড়া ধরে বিক্রি করতে না পারার কারণে খামারে প্রতিদিনই কাঁকড়া মারা যায়।
খুলনা বিভাগীয় মৎস্য অফিস ও স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, চার-পাঁচ বছর হলো খুলনার বাটিয়াঘাটা, দাকোপ, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা ও কয়রা, বাগেরহাটের মোল্লাহাট, রামপাল, মোংলা ও শরণখোলা এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ ও তেবহাটা উপজেলায় কাঁকড়ার চাষ শুরু হয়েছে।
খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এবং বিভাগীয় মৎস্য অধিদফতরের ইনচার্জ আবু সাঈদ জানান, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বাটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া, কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপসহ অন্যান্য উপজেলার ২৮ হাজার ৫৪৬ হেক্টর জমিতে প্রায় সাত হাজার মেট্রিক টন কাঁকড়া উৎপাদিত হয়েছে।
আলমগীর হান্নান/এমএইচআর/জেআইএম