দরিদ্র জেলেদের মাছ লুটের অভিযোগ আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে
কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাড়ের সঙ্গে গর্ত করে এবং জাল দিয়ে বাঁধ দিয়ে দরিদ্র জেলেদের জলমহাল থেকে মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মিলছে না বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত জেলেদের।
অভিযোগে জানা গেছে, মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের ‘হাতুরিয়া নদী’ সরকারি জলমহাল ১৪২৬-১৪৩১ মেয়াদে ইজারা নেয় স্থানীয় মালিউন্দ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি: নামে একটি মৎস্যজীবী সংগঠন। ইজারা মূল্য, মাছের পোনা ছাড়া, কাঠ-বাঁশ দিয়ে অভয়ারণ্য তৈরিসহ অন্তত ২০ লাখ টাকা খরচ করে জলমহালটি মাছ ধরার উপযোগী করা হয়।
৫ জন পাহারাদার ছাড়াও ২৪ জন জেলে এ জলমাহালে মাছ ধরে জীবীকা নির্বাহ করেন। এ অবস্থায় প্রভাবশালীরা জোর করে মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছেন জেলেরা।
গত ৯ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন মালিউন্দ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন।
এতে উল্লেখ করা হয়, জলমহাল ইজারা নেয়ার পর ঘাগড়া বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য জলমহালের অংশে গত বছর ড্রেজিং করা হয়। ড্রেজিং করার সময় জলমহালের পাড়ে কিছু অংশে বড় গর্তের তৈরি হয়। এ অবস্থায় ঘাগড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বুরহান উদ্দিন চৌধুরীসহ কয়েকজন প্রভাবশালী জোরপূর্বক জলমহালের গর্তের পাশে মাটি ভেঙে নতুন সৃষ্টি হওয়া গর্ত থেকে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছেন।
তৌহিদ হোসেনের অভিযোগ, জলমহালের চারপাশের জালের বেড়া কেটে ২০ লাখ টাকার মাছ নিয়ে যায় প্রভাবশালীরা। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসির কাছে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাচ্ছেন না তারা।
অভিযোগের বিষয়ে ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বুরহান উদ্দিন চৌধুরী বুলবুলের সঙ্গে কথা হলে তিনি ফিসারি থেকে মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযান অস্বীকার করেন।
তিনি বলেন, হাতুরিয়া নদীর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কয়েকটি পুকুর আছে। নদী ড্রেজিং করার সময় পুকুরের গর্তের সঙ্গে মাটি ভেঙে নতুন গর্ত হয়। সেসব গর্তে আমি জাল দিয়ে মাছ আটকে রেখেছি। এটি আমার ব্যক্তিগত জমি। তদন্ত করলেই এর প্রমাণ মিলবে।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২০ ডিসেম্বর অভিযোগ তদন্ত করে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মিঠামইন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
নূর মোহাম্মদ/এফএ/এমকেএইচ