আদিবাসীদের ভূমি কমিশন গঠনের দাবিতে লংমার্চ
সমতল আদিবাসীদের জন্য পৃথক ও স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠনের দাবিতে ১৫-১৬ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থেকে রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয় অভিমুখে লংমার্চ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে শহরের টাউন ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে ৩৮টির বেশি আদিবাসী জাতিসত্ত্বার প্রায় ২০ লক্ষাধিক আদিবাসী বসবাস করেন। এ অঞ্চলের আদিবাসীরা এক সময় প্রচুর সম্পদ ও ভূমির মালিক ছিলেন। কিন্তু বৃটিশ আমলে এবং পরবর্তীতে পাকিস্তান আমলে নিপীড়নের শিকার হন তারা। মুক্তিযুদ্ধের সময় সহায় সম্পদ হারিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। ফলে আর্থ-সামাজিক অবস্থা ভেঙে পড়েছে। স্বাধীনতার ৪৪ বছরেও বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ, অত্যাচর নিপীড়ন, হত্যা ও নারী নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটে চলেছে। এসব ঘটনায় বহু আদিবাসী দেশত্যাগে বাধ্য হচ্ছেন।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদ সমতল আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনের দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনী ইস্তেহারে সুস্পষ্ট উল্লেখ করেছিল যে, ক্ষমতায় গেলে পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করা হবে। সরকারের দুই মেয়াদে ক্ষমতার প্রায় সাত বছর অতিক্রান্ত হতে চলেছে। কিন্তু সরকার এ দাবিকে আমলে না নিয়ে সমতল আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশন গঠনের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এতে আদিবাসী জনগণ চরম হতাশ।
আদিবাসীদের মালিকানাধীন চাষের জমি, বসতভিটা, কবরস্থান, মন্দিরের জায়গা জমি এক শ্রেণির ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-বর্মচারীদের সহযোগিতায় ভূমি দস্যুরা জবরদখল, জাল দলিল করে, মিথ্যাভাবে অনাগরিক অর্পিত সম্পত্তিতে তালিকাভুক্ত করে উচ্ছেদ করে চলেছেন। এভাবে আদিবাসীরা জমি হারিয়ে ভূমিহীন হচ্ছেন। তাই সরকার সমতল আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করে ভূমির অধিকার নিশ্চিত করবে। সে লক্ষ্যে আগামী ১৫ ও ১৬ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল বাসস্ট্যান্ড থেকে রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয় অভিমুখে লংমার্চের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। লংমার্চে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও রাজশাহী জেলার কয়েক হাজার আদিবাসী নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করবেন বলে তারা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিমল চন্দ্র রাজোয়ার, আদিবাসী নেতা অনিল মারাণ্ডি, সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম প্রমুখ।
মোহা. আব্দুলাহ/এমজেড