ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

জমির দলিলটি বঙ্গবন্ধু কন্যাকে নিজ হাতে দিতে চাই : সুখরঞ্জন

নিজস্ব প্রতিবেদক | বরিশাল | প্রকাশিত: ০৭:৪৭ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২০

সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকজন পুণ্য অর্জনে মন্দিরে সম্পত্তি দান করে থাকেন। বরিশালের বানারীপাড়ার কাজলাহার গ্রামের বাসিন্দা হিন্দুধর্মাবলম্বী সুখরঞ্জন ঘরামীও তার সম্পত্তি দান করেছেন। তবে তিনি সম্পত্তি দান করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নামে। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধুকে সাধারণ মানুষ মনে করতেন না। বঙ্গবন্ধু তার কাছে মুক্তির দেবতা।

তার বিশ্বাস দ্বাপর যুগে পাশবিক শক্তি যখন সত্য, সুন্দর ও পবিত্রতাকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই অসুন্দর, অসুর ও দানবীয় পাশবিক শক্তিকে দমন করে মানবজাতিকে রক্ষা এবং শুভশক্তিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। একইভাবে পাকিস্তানি হানাদারদের হাত থেকে বাঙালি জাতিকে রক্ষা করতে এই ধরাধামে অবতীর্ণ হন বঙ্গবন্ধু। তিনিই ছিলেন বাঙালি জাতির উদ্ধার কর্তা। তাই বঙ্গবন্ধুকে তিনি দেবতার আসনে বসিয়েছেন। প্রতিদিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা ও পূজা করেন। এরপর পূজা দেন বঙ্গবন্ধুর ছবিতে। দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে সুখরঞ্জন ঘরামী বঙ্গবন্ধুর ছবিতে পূজা দিচ্ছেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর শোকে দুই দিন কিছুই মুখে দেননি সুখরঞ্জন ঘরামী। তার জীবনজুড়েই রয়েছেন বঙ্গবন্ধু।

৭৯ বছর বয়সী সুখরঞ্জন ঘরামী পেশায় আইনজীবী সহকারী। তার বাবা শ্রীনাথ ঘরামী ছিলেন আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় কর্মী। বঙ্গবন্ধুর প্রতি এতই অনুরাগী ছিলেন যে কিশোর বয়সেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেন। সেই থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অন্তরে লালন করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির যুক্ত হন।

সুখরঞ্জন ঘরামী বলেন, বঙ্গবন্ধু আমার কাছে মুক্তির দেবতা। জাতিভেদ, ধর্মীয় মতভেদ, ছোট-বড়, উঁচু-নিচু জাতভেদ তা তার কাছে বিবেচনার বিষয় ছিল না। তিনি শুধু মানুষের কল্যাণ চেয়েছেন। মানুষের কল্যাণে তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মত তিনিও শুভশক্তিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন।

সুখরঞ্জন ঘরামী বলেন, সম্প্রতি বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে বানারীপাড়া-স্বরূপকাঠি সড়কের পাশে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যার ভাস্কর্য নির্মাণ করা হচ্ছে আমরা জমির পাশে। ভাস্কর্য দেখতে দর্শনার্থীরা আসবে। তারা বিশ্রাম নিবেন। কিন্ত ভাস্কর্য দুটির পাশে দর্শনার্থীদের বিশ্রাম বা বসার মত কোনো ছাউনি নেই। কারণ সেখানে পর্যাপ্ত সরকারি জমি নেই।

সুখরঞ্জন ঘরামী বলেন, শেখ হাসিনার মাঝে আমি খুঁজে পাই বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি, খুঁজে পাই আমার দেবতাকে। তাই আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যার নামে পাঁচ শতাংশ জমি লিখে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেই।

রোববার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে চাখার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রহীতা করে ওই সম্পত্তি লিখে দেই। যা আমার জীবনের অন্যতম একটা অর্জনও বলতে পারি।

সুখরঞ্জন ঘরামী বলেন, জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছেছি। এখন আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। তবে নিজ হাতে জমির দলিলটি বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে দিতে চাই।

বানারীপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাহাদ সুমন বলেন, সুখরঞ্জন ঘরামী আওয়ামী লীগের একজন ত্যাগী ও নিবেদিত কর্মী। তার আরও একটি পরিচয় আছে। মুজিব প্রেমী। বঙ্গবন্ধুর অন্ধ ভক্ত বলতে যা বোঝায়, তার চেয়েও যেন বেশি কিছু।

জমি লিখে দেয়াটা ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার শ্রদ্ধা-ভক্তির বহিঃপ্রকাশ। যা দলের অন্য নেতাকর্মীদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।

সাইফ আমীন/এএইচ/এমকেএইচ