ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

আত্রাইয়ের বিলসুতি জলাশয়ে বাঁশের বেড়া : অনাহারে মৎস্যজীবীরা

জেলা প্রতিনিধি | নওগাঁ | প্রকাশিত: ০২:৪৪ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০২০

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার হাটকালুপাড়া ইউনিয়নে উন্মুক্ত জলাশয় বিলসুতিতে বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ চাষের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে বেড়া অপসারণসহ জলাশয়টি উন্মুক্ত করতে জেলা প্রশাসন বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় মৎস্যজীবীরা।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত রোববার (৮ নভেম্বর) বেলা ১১টায় হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের চড়কতলা প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে কার্যক্রম শুরু করে তদন্ত কমিটি। এর কিছুক্ষণ পরই উত্তেজনা শুরু হলে তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

জানা গেছে, উপজেলার হাটকালুপাড়া ইউনিয়ন ও রাজশাহীর বাঘমারা উপজেলার কিছু অংশ নিয়ে এ উন্মুক্ত জলাশয় ‘বিলসুতি’। এ জলাশয়ে হাটকালুপাড়া, বড় শিমলা, চকশিমলা, ছোট শিমলাসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৭০০ পরিবার মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। এ জলাশয়ে আষাঢ় থেকে অগ্রহায়ণ (ছয় মাস) পর্যন্ত পানি থাকে। কিন্তু হাটকালুপাড়া, শিমলা মৌজা ও বিলসুতি বিল উত্তর অংশ মৎস্য চাষ প্রকল্পের সভাপতি আব্দুল কাদের, সাধারণ সম্পাদক আহসান, রমজান আলী শেখ, হবিবুর রহমান, মুনছুর রহমান, কামরুজ্জামান বাবুল ও মোজাম্মেল হকসহ কয়েকজন প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গত চার বছর থেকে মাছ চাষ করে আসছেন।

মৎস্যজীবীদের জলাশয়ে মাছ শিকার করতে দেয়া হয় না। মাছ শিকারের জন্য জলাশয়ে নামলে নৌকা ডুবিয়ে দেয়া হয়, মারপিট এবং ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি মৎস্যজীবীদের সঙ্গে সমঝোতার জন্য প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

Naogoan-1

গজমতখালী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সহ-সভাপতি জামিল হোসেন, হাটকালুপাড়া গ্রামের জামাল উদ্দিন, সদের আলী, গৃহবধূ রোকেয়া বেগমসহ অনেকেই জানান, মাছ শিকার করে তাদের সংসার চলে। গত কয়েক বছর থেকে প্রভাবশালী মহল জলাশয়ে আমাদের নামতে দেয় না। জবরদখল করে প্রভাবশালীরা বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে কয়েক দফায় বেড়া সরিয়ে দিলেও পুনরায় তারা দখলে নিয়েছে। মাছ শিকার করতে গেলে নৌকা ডুবিয়ে দেয়া, জাল নষ্ট ও মারপিট করা হয়। এমনকি বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকিও দেয়। বাধ্য হয়ে অনেকে এলাকা ছেড়ে ঢাকায় রিকশা চালান ও পোশাক কারখানায় কাজ করছে।

তাদের অভিযোগ, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোটা অংকের টাকা নিয়েছে। এ কারণে মৎস্যচাষীদের সঙ্গে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছেন।

এদিকে অভিযুক্ত আব্দুল কাদের, আহসান ও হবিবুর রহমান বলেন, ব্যক্তি মালিকানার জমিতে অধিকাংশ সময় পানি জমে থাকায় ঠিকমতো ফসল হয় না। বন্যায় জমিতে পানি ওঠায় বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এতে মৎস্যজীবীদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ধানের চেয়ে মাছ চাষ লাভজনক। এছাড়া মৎস্যজীবীদের হুমকি ও নৌকা ডুবিয়ে দেয়ার বিষয়টি ঠিক নয়।

আত্রাই উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা পলাশ চন্দ্র দেব নাথ বলেন, তদন্ত চলার কিছু পরই উত্তেজনা শুরু হলে নিরাপত্তার স্বার্থে চলে এসেছি। বর্তমানে যারা দখলে রেখেছেন তাদের সঙ্গে মৎস্যজীবীদের আপস করার বিষয়টি ভিত্তিহীন। আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।

আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ছানাউল ইসলাম বলেন, বিষয়টির তদন্ত চলছে। ইতোপূর্বে কয়েকবার আমরা অবৈধ বাঁধ ও বাঁশের বেড়া উচ্ছেদ করেছি। জলাশয়টি যেন উন্মুক্ত হয় সেটি দেখা হবে।

আব্বাস আলী/এএইচ/পিআর