মা-বাবার লাশের পাশে কান্না করা শিশুটির দায়িত্ব নিলেন ডিসি
সৌভাগ্যক্রমে খুনিদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া ছয় মাসের শিশু মারিয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক (ডিসি) এস.এম মোস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে শিশু মারিয়ার দায়িত্ব নেন তিনি। আপাতত দেখভালের জন্য স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য (মেম্বার) নাসিমা খাতুনের কাছে বুঝিয়ে দেন ডিসি।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক (ডিসি) এস.এম মোস্তফা কামাল বলেন, নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হয়েছেন এক পরিবারের স্বামী-স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ চারজন। তবে খুনিরা ছয় মাসের শিশুটিকে হত্যা করেনি। সৌভাগ্যক্রমে সে বেঁচে যায়।
তিনি বলেন, মায়ের গলাকাটা লাশের পাশে কাঁদছিল শিশু মারিয়া। শিশুটির পরিবারে এখন আপনজন বলতে কেউ নেই। আত্মীয়-স্বজনও কেউ নেই। শিশুটির দায়িত্ব নিয়েছি আমি। আপতত দেখভালের জন্য স্থানীয় নারী ইউপি সদস্যকে দায়িত্ব দিয়েছি। শিশুটির পরিবারের কোনো স্বজন শিশুটির দাবি করলে আইনগতভাবে সমাধান করা হবে। শিশুটি এখন থেকে আমার তত্ত্বাবধানে থাকবে।
বৃহস্পতিবার ভোরে কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে মাছের ঘের ব্যবসায়ী মো. শাহীনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩০), ছেলে সিয়াম হোসেন মাহি (৯) ও মেয়ে তাসমিন সুলতানাকে (৬) জবাই করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরিবারের পাঁচ সদস্যের মধ্যে চারজনকে হত্যা করলেও শিশু মারিয়াকে মায়ের মরদেহের পাশে ফেলে রেখে যায় খুনিরা। সেখানে পড়ে কাঁদছিল শিশুটি। সেখান থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
পারিবারিক বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করছেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
এসপি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সিআইডির ক্রাইম সিন টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও আলামত সংগ্রহ করেছে। ঘটনাস্থল ঘিরে রাখা হয়েছে। পারিবারিক বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
কলারোয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারান চন্দ্র পাল বলেন, বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। এ নিয়ে তদন্ত চলছে।
আকরামুল ইসলাম/এএম/জেআইএম