ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

৪ মাস ধরে সৌদির হিমঘরে পড়ে আছে সাদ্দামের লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | রংপুর | প্রকাশিত: ০৯:১১ এএম, ২৩ আগস্ট ২০২০

প্রায় ৪ মাস ধরে সৌদি আরবের হিমঘরে পড়ে আছে রংপুরের পীরগঞ্জের সাদ্দাম হোসেনের (২৫) লাশ। রাজধানীর ‘মোহনা ওভারসীজ’র প্রতিনিধি পীরগঞ্জের জাহাঙ্গীর আলম বুলু হাজি বলছেন, সাদ্দাম করোনায় মারা গেছেন। তবে সাদ্দামের পরিবারের দাবি, সাদ্দামকে মেরে লাশ সিঁড়িতে ঝুলে রাখা হয়। এ ব্যাপারে ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ করা হয়েছে।

জানা গেছে, পীরগঞ্জের চৈত্রকোল ইউনিয়নের হাজীপুরের মৃত মমদেল হোসেনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বুলু হাজি জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘মোহনা ওভারসীজ’র মাধ্যমে স্থানীয় অনেককেই সৌদিতে পাঠিয়েছেন। তিনিই ভেন্ডাবাড়ীর মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে সাদ্দাম হোসেনকে প্রায় ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে ২০১৯ সালের ১৭ মে ৯০ দিনের ভিসায় সৌদির রিয়াদে পাঠান। ৯০ দিন অতিবাহিত হলেও সাদ্দামকে বৈধ কাগজপত্র (আকামা) না দেয়ায় গত ২১ এপ্রিল বুলু হাজির সঙ্গে সাদ্দামের পরিবারের লোকজনের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর থেকেই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয় সাদ্দামের।

গত ২৭ এপ্রিল বুলু হাজি এলাকায় প্রচার করেন, সাদ্দাম করোনায় মারা গেছে। এ কথা লোকমুখে শুনে সাদ্দামের বড় ভাই রব্বানী মিয়া ২৮ এপ্রিল ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয় সাদ্দামের কর্মস্থলে কোনো লোক মারা যায়নি। তাকে হত্যা করা হয়েছে।

সাদ্দামের বড় ভাই রব্বানী মিয়া বলেন, হাবিব রহমান নামের এক ফেসবুক আইডিতে ২৯ এপ্রিল সিঁড়িতে ঝুলন্ত একটি লাশের ভিডিও ছাড়া হয়। ভিডিওতে লাশটি সাদ্দামের বলে চিনতে পেরে স্ক্রিনশট নিয়েছি। সাদ্দাম করোনায় মারা যায়নি। তাকে মেরে ফেলে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। মৃত্যু নিয়ে জটিলতার কারণে গত এপ্রিল থেকে আজও সৌদির হিমঘরে লাশটি পড়ে আছে।

এদিকে বুলু হাজী সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকার বনানীর মোহনা ওভারসীজ, রিক্রুটিং লাইসেন্স নং- ২৬৯, বাড়ী নং- ১৮ (৪০২), রোড নং- ২৪ (লেকপাড়), ব্লক-‘ক’ এর মাধ্যমে আমি এলাকার অনেককে সৌদিতে পাঠিয়েছি। সাদ্দামকেও সেখানে পাঠাই। কিন্তু ওই ওভারসীজের সৌদির রিয়াদ প্রতিনিধি আলাউদ্দিন তাকে কাজ ও বৈধ কাগজপত্রের ব্যবস্থা করে দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, রিয়াদ থেকে আলাউদ্দিন আমাকে জানায় সাদ্দাম করোনায় মারা গেছে।

অপরদিকে সাদ্দামের অপমৃত্যুতে তার বৃদ্ধা মা হাছনা বেগমসহ (৫৮) পরিবারের সদস্যদের মাঝে এখনও শোকের মাতম চলছে। ছেলের লাশের অপেক্ষায় কেঁদে দিন কাটছে বৃদ্ধা মায়ের। তিনি ছেলের লাশ দেশে ফেরত আনতে প্রধানমন্ত্রী এবং স্থানীয় এমপি ও সংসদের স্পিকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ভেন্ডাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, সাদ্দামের লাশের ব্যাপারে ইউএনও স্যার আমাকে ফোন করে দাফনের অনুমতি চেয়েছিল, কিন্তু এখনও লাশ দাফন হয়নি।

ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ শাহিন মিয়া বলেন, অভিযোগের বিবাদী বুলু হাজী জানিয়েছেন সৌদিতে সাদ্দামকে আকামা (থাকার অনুমতি) দেয়া হয়নি। লাশের ব্যাপারে কিছু বলতে পারছি না।

জিতু কবীর/এফএ/পিআর