করোনা পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট দেয়ায় কেমোথেরাপি নিতে পারেননি রাশিদা
করোনা পরীক্ষার ভুল প্রতিবেদন দেয়ায় কেমোথেরাপি নিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ক্যানসার আক্রান্ত রাশিদা রোকসানা (৩০) নামের এক নারী।
রাশিদা রোকসানা আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের ফুল্লশ্রী গ্রামের মৃত হারুন আর রশিদের মেয়ে। তিনি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্যবিমোচন ও পল্লি উন্নয়ন একাডেমির (বাপার্ড) মাঠ সহকারী।
রাশিদা রোকসানা জানান, ২০১৯ সালে তার ক্যানসার ধরা পড়ে। চিকিৎসকদের পরামর্শে এরপর থেকে ২১ দিন পর পর তাকে কেমোথেরাপি নিতে হয়। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ ছাড়া কয়েক মাস ধরে হাসপাতালে কেমোথেরাপি দেয়া হচ্ছে না। এজন্য প্রতিমাসে তাকে নমুনা পরীক্ষা করাতে হয়।
গত ২৮ জুলাই মহাখালী ক্যানসার হাসপাতালে কেমোথেরাপি নেয়ার কথা ছিল তার। সেজন্য গত ২৫ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনি নমুনা দেন। করোনার উপসর্গ না থাকলেও ২৭ জুলাই ফরিদুপর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাব থেকে তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পজিটিভ রিপোর্টের বিষয়টি কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারী চিকিৎসক শামছুল আলম তাকে ফোন দিয়ে জানান। তবে রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ার তার সন্দেহ হয়। এরপর কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুশান্ত বাড়ৈ ও চিকিৎসক শামছুল আলমকে পুনরায় নমুনা নেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কেমোথেরাপি নেয়ার বিষয়টি তাদের জানালেও পুনরায় তারা নমুনা নিতে রাজি হননি।
রাশিদা রোকসানা জানান, কোটালীপাড়ায় ব্যর্থ হয়ে আগৈলঝাড়ায় চলে আসি। সেখানের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে সব কিছু খুলে বলি। তারা নমুনা সংগ্রহ করে ওই দিনই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ল্যাবে পাঠান। ২৯ জুলাই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে তার। এর ফলে কেমোথেরাপি নেয়া হয়নি তার।
রাশিদা রোকসানা বলেন, ২৮ জুলাই মহাখালী ক্যানসার হাসপাতালে কেমোথেরাপি নেয়ার দিন নির্ধারিত ছিল। তবে এর আগে নেগেটিভ রিপোর্ট না আসায় সেখানে যাওয়া হয়নি। কেমোথেরাপি দেয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফের কবে তারিখ দেন বলতে পারছি না। ঈদের পর ঢাকায় গিয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছে। এরপর তারা কেমোথেরাপি দেয়ার জন্য পুনরায় তারিখ নির্ধারণ করবেন। তখন আবার ঢাকায় যেতে হবে। ফরিদুপর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাব থেকে ভুল রিপোর্টের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই।
আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বখতিয়ার আল মামুন বলেন, রাশিদা ক্যানসার আক্রান্ত। বিষয়টি জানতে পেরে তার নমুনা সংগ্রহ করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ল্যাবে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। পরবর্তীতে তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তবে এর আগে ফরিদুপর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাব থেকে কিভাবে তার পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে তা বলতে পারছি না। এটা সেখানকার ল্যাব টেকনোলজিস্টরা ভালো বলতে পারবেন।
বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, পিসিআর টেস্টে ভুলে নেগেটিভ আসতে পারে। তবে বিষয়টি অন্য বিভাগের আরেকটি জেলার। তাই বিষয়টি না জেনে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
সাইফ আমীন/এএম/পিআর