রোগীর মৃত্যুর একমাস পর করোনার রিপোর্ট পেল পরিবার
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক মাস আগে এক নারীর মৃত্যু হলেও জানতো না উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। মৃত ওই নারীর নাম শাহানা বেগম (৬০)। গত ৪ জুন মারা যান ভৈরব বাজারের বাসিন্দা শাহানা। আর তার করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর বিষয়টি ৫ জুলাই নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
তবে উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদের দাবি মৃত নারীর পরিবারের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এমনটা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ২ জুন শাহানা বেগম নমুনা দেন। এরপর গেল ৭ জুন তার রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে। কিন্তু তার দেয়া নাম ও ঠিকানার সঙ্গে দেয়া মোবাইল নম্বর আমরা বন্ধ পাই। ফলে শাহানা বেগমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে গতকাল রোববার তাদের মোবাইলে কল করা হলে নম্বরটি চালু পাওয়া যায়। পরে কলটি রিসিভ করলে শাহানা বেগমের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মারা গেছেন বলে জানায় তারা।
এদিকে শাহানা বেগমের করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি জানতো পরিবার কিংবা প্রতিবেশীরা। ফলে তাকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফনও করা হয়নি। এ কারণে অনেকে করোনায় সংক্রমিত হতে পারেন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
তাড়াছা করোনা প্রতিরোধ কমিটি বা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির কারণে এমনটি হয়েছে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।
এদিকে রোববার (৫ জুলাই) ভোরে পৌর শহরে শহিদ মিয়া (৭০) নামে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে ২ জুন নমুনা দিলে ৭ জুন রিপোর্ট পজিটিভ আসে তার। পরে তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়। প্রায় এক মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি মারা গেলেন।
নতুন করে এ দু’জনের মৃত্যুর খবরে উপজেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ জনে। আর মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে মাত্র একজন ব্যতীত সবার বয়স ৫০ বছরের উপরে। তারা সবাই বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ বলেন, দায়িত্বে কোনো রকম অবহেলা বা গাফিলতি হয়নি। কেউ যদি ফোন বন্ধ রাখে তাহলে আমরা সেবা দেব নাকি রোগী খুঁজব?
তিনি আরও জানান, গেল ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলায় মোট ৫২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও নতুন করে আরও ১১ জন সুস্থ হয়েছেন। ফলে উপজেলায় সর্বোমোট ৪৪৮ জন সুস্থ হয়েছেন।
ডা. বুলবুল আহমেদ আরও জানান, এ পর্যন্ত ২৬৮০ জনের দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরমধ্যে ২৬৬৯ জনের রেজাল্ট এসেছে। মাত্র ১১ জনের রিপোর্ট পেন্ডিং রয়েছে।
এফএ/পিআর