নার্সদের থাকার ব্যবস্থা করায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে সিলেটে ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন নার্সরা।তাদের সেবায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরছেন রোগীরা। সুস্থ হওয়া রোগীদের করোনাজয়ের হাসিতেই যেন সকল প্রাপ্তি একেকজন নার্সের। কিন্তু ভাড়া বাসা বাড়িতে মালিকদের উটকো ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে নার্সদের।
এ অবস্থায় করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত নার্সদের জন্য আলাদা একটি হোটেলের ব্যবস্থা করে দেয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখা।
বিএনএ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখার সভাপতি শামীমা নাসরিন ও সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী সাদেক শনিবার বিকেলে এক বিবৃতিতে বলেন, করোনা আক্রান্তদের সেবা দিতে গিয়ে অনেক নার্স নিজেও আক্রান্ত হচ্ছেন। করোনাজয় করে তারা আবার ফিরছেন কর্মক্ষেত্রে। ভয়কে জয় করে তারা নিজেদেরকে সঁপে দিয়েছেন মানবতার সেবায়। এ যে উদ্যম, দৃঢ়চেতা মনোবল- সেটার পেছনে সবচেয়ে বড় যার অবদান তিনি হচ্ছেন আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। সিলেটের সর্বস্তরের নার্সরা যাকে তাদের অভিভাবক হিসেবে মনে করেন।
তারা আরও বলেন, করোনাকালীন সময়ে সিলেটের নার্সদের সুরক্ষা নিশ্চিতে অনেক কাজ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কোনো কিছুর জন্য দাবি করতে হয়নি তার কাছে। নার্সদের প্রয়োজনীয়তার তাগিদ তিনি নিজ থেকে অনুভব করেছেন। বাড়িয়ে দিয়েছেন সহায়তার হাত। খোঁজ রেখেছেন সবসময়।
শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের নার্সিং কর্মকর্তা রুহুল আমিন মারা যাওয়ার পর কি-না করেছেন মন্ত্রী ও তার সহধর্মিণী সেলিনা মোমেন। ওই সময় মন্ত্রী মহোদয় পাশে না দাঁড়ালে রুহুল আমিন ভাইয়ের পরিবার হয়তো শোকের অন্ধকার কেটে এত সহসা আলোতে আসতে পারতো না।
নার্স নেতারা বলেন, যতদিন যাচ্ছে সিলেটে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে এখন রোগীতে পরিপূর্ণ। প্রায় একশ’ জন রোগীকে প্রতিদিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন নার্সরা। নার্সরা যেহেতু দূর থেকে সেবা দেয়ার সুযোগ নেই, তাই তারা রোগীর কাছে থাকতে হয়। রোগীর হাত ধরে লাগিয়ে দিতে হয় ক্যানোলা। গুরুতর অসুস্থ রোগীকে ধরে তুলতে হয় বিছানা থেকে। তাই সঙ্গত কারণে দিন দিন নার্সদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে।
নার্সদের সেবায় মানুষ সুস্থ হয়ে ফিরলেও সেই ‘মানুষ’দের কাছেই নিগৃহিত তারা। করোনা রোগীদের সংস্পর্শে থাকায় নার্সরা বাসায় ফিরতে পারেন না। থাকতে হয় পরিবার থেকে দূরে। অনেক নার্সকে বাসা ছাড়তে চাপ দেন বাড়িওয়ালা। এ অবস্থায় চিকিৎসকদের সাথে একই হোটেলে ওঠেন নার্সরা। কিন্তু তাতে সংকুলান হচ্ছিল না। নার্সদের আবাসনের জন্য আরও একটি হোটেলের প্রয়োজন দেখা দেয়। সেই প্রয়োজনের কথা জানতে পারেন আমাদের অভিভাবক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তার নির্দেশে আলাদা একটি অত্যাধুনিক হোটেল পেয়েছেন নার্সরা। এখন হাসপাতালে ডিউটি শেষ করে নির্ধারিত ওই হাসপাতালে থাকছেন তারা।
করোনার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ড. মোমেন স্যার আমাদের জন্য যা করেছেন আমরা তা কোনোদিনও ভুলতে পারবো না। মন্ত্রী ও তার সহধর্মিণী মমতাময়ী মা সেলিনা মোমেনের কাছে আমরা চিরঋণী বলেন তারা।
নার্সদের জন্য আলাদা হোটেলের ব্যবস্থা করে দেয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নারিন ও সাদেক বলেন, আরও কয়েকজন মানবিক মানুষের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এ মানবিকযোদ্ধারা সবসময় আমাদের পাশে থেকে সহায়তা করে যাচ্ছেন।
তারা হলেন, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ইউনুছুর রহমান স্যার, উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় স্যার, বিএমএ’র করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডা. আজিজুর রহমান রোমান স্যার ও সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. আদনান চৌধুরী স্যার।
ছামির মাহমুদ/এমএএস/জেআইএম