বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষে সরকারি সহায়তা পাবেন রাঙ্গামাটির ১৪৩০ কৃষক
করোনাভাইরাসের এই ক্রান্তিকালে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা যেন খাদ্য সংকটে না পড়েন সেজন্য বসতবাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কৃষি বিভাগ। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ শুরু করে দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। রাঙ্গামাটিতে এক হাজার ৪৩০ জন কৃষককে এই কর্মসূচির আওতায় এনে বীজ, চারা ও নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা গেছে , ইতোমধ্যে বসতবাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ কর্মসূচির আওতায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ৩ হাজার ১৯০ জন প্রান্তিক কৃষকের নামের তালিকা পাঠানোর কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এর মধ্যে রাঙ্গামাটির এক হাজার ৪৩০ জনের নাম রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এ তালিকা করা হয়েছে। এতে কৃষকের নাম, কৃষকের বাবার নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর অথবা মোবাইল ব্যাংকিং নম্বর সংযুক্ত করা হয়েছে। রাঙ্গামাটির ৪৫টি ইউনিয়নের ৩২ জন করে কৃষক এই সহায়তা পাবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, প্রত্যেক কৃষক স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ ও চারা পাবেন। এছাড়াও জনপ্রতি জৈব ও অজৈব সার বাবদ ৪৩৫ টাকা, শাক-সবজি রক্ষায় বেড়া তৈরির খরচ বাবদ এক হাজার টাকা ও পরিচর্যা বাবদ ৫০০ টাকাসহ নগদ মোট ১৯৩৫ টাকা পাবেন। রাঙ্গামাটির এক হাজার ৪৩০ জন প্রান্তিক কৃষক ১৯৩৫ টাকা করে মোট ২৭ লাখ ৬৭ হাজার ৫০ টাকা পাবেন।
এ নগদ অর্থ ব্যাংক হিসাব অথবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (বিকাশ ও নগদ) মাধ্যমে হাতে পাবেন কৃষকরা। এই টাকা মাঠ পর্যায়ের কৃষকের হাতে পৌঁছেছে কিনা কিংবা তালিকায় কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা তা সরাসরি কৃষি মন্ত্রণালয় অথবা অতিরিক্ত কার্যালয়ের কর্মকর্তারা তদারকি করে নিশ্চিত হবেন।
মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের এ উদ্যোগের ফলে করোনাভাইরাসের এই মহামারির সময় প্রান্তিক কৃষকদের খাদ্য সংকটে পড়তে হবে না। একদিকে যেমন কৃষকরা পুষ্টিকর শাক-সবজি উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা পূরণ করতে পারবেন, অন্যদিকে এ মহামারিতে সামান্য শাক-সবজির জন্য হাঁট-বাজারে তাদের যেতে হবে না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রাঙ্গামাটি অঞ্চলের (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) অতিরিক্ত পরিচালক মো. ফজলুর রহমান বলেন, সর্বনিম্ন এক শতক জমিতে বসতবাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ কর্মসূচির আওতায় পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার ১০০টি ইউনিয়ন থেকে ৩২ জন করে কৃষক স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ ও চারা পাবেন। এছাড়াও ব্যাংক কিংবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাবেন। যা সার, পরিচর্যা ও সবজি বাগান সুরক্ষা বাবদ খরচ করবেন। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রান্তিক কৃষকরা করোনাকালে শাক-সবজির সংকটে পড়বে না বলে আশা করা যায়।
সাইফুল উদ্দিন/আরএআর/জেআইএম