সিলেট সিটির ১৮টি ওয়ার্ড লকডাউনের প্রস্তাব
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশের ন্যায় সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডকে তিনটি আলাদা জোনে ভাগ করা হয়েছে। একইভাবে জেলার ১৩টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকাকে সংক্রমণের মাত্রা বিবেচনায় বিভিন্ন এলাকাকে রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোনে ভাগ করা হচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত অঞ্চলকে রেড জোন আখ্যা দেয়া হচ্ছে। আর মোটামুটি আক্রান্ত এলাকাকে ইয়েলো ও সবচেয়ে কম সংক্রমিত এলাকাকে সবুজ জোনে ভাগ করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ জুন) করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত মাল্টি সেক্টরিয়াল সিলেট জেলা কমিটির সভায় তালিকা দুটি যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা রয়েছে।
সিলেট জেলাতেও একইভাবে তিন ভাগে আলাদা করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রোববার সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) থেকে মোট ২৭টি ওয়ার্ডকে আলাদা আলাদা জোনে ভাগ করে একটি প্রস্তাবনা সিলেট সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা থেকেও এ ধরনের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
সিলেটের সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এই প্রস্তাবনাগুলো মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেলে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলোকে লকডাউন করা হবে।
সিসিক সূত্রে জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের করা তালিকায় ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টি ওয়ার্ডকেই রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া ইয়েলো জোনে আছে ৪টি ওয়ার্ড ও গ্রিন জোনে আছে ৫টি ওয়ার্ডকে রাখা হয়েছে।
রেড জোন হিসেবে সিসিকের যেসব ওয়ার্ডকে চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলো হলো- ১ থেকে ৯ নম্বর ওয়ার্ড, ১২ থেকে ১৪ এবং ১৬ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড। এছাড়া ১৯ থেকে ২২ ওয়ার্ডকেও রেড জোনে রাখা হয়েছে।
ইয়েলো জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ১০, ১৫, ১৮ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডকে। গ্রিন জোনে আছে- সিসিকের ১১ এবং ২৩ থেকে ২৬ নম্বর ওয়ার্ড।
এ প্রসঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি আদেশে সিটি করপোরেশনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়াদের তালিকা যাচাই-বাছাই করে আমরা তিনটি ভাগে ২৭টি ওয়ার্ডকে জোনভিত্তিক ভাগ করেছি। রোববার (১৪ জুন) বিকেলে এই তালিকা জেলার সিভিল সার্জনের কাছে জমা দেয়া হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সিসিক।
এদিকে সিলেট জেলার মোট ১৩টি উপজেলাকেও এভাবে পৃথকভাবে তিনটি জোনে ভাগ করেছে সিভিল সার্জনের কার্যালয়। এই দুটি তালিকা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত মাল্টি সেক্টরিয়াল সিলেট জেলা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম আজ বৈঠক করবেন। বৈঠকে তালিকা দুটি যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর তা সচিবালয় চূড়ান্ত করে আবার জেলায় জেলায় পরবর্তীতে রেড জোনগুলোকে লকডাউনের জন্য আদেশ পাঠানোর কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে সিলেট জেলার সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল বলেন, সিলেটের প্রত্যেক উপজেলার একেবারে ইউনিয়ন পর্যন্ত এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রত্যেক ওয়ার্ড পর্যন্ত রেড, গ্রিন ও ইয়েলো জোনে ভাগ করা হয়েছে। এটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সোমবার অনুষ্ঠিত সভায় চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সিলেটের উপজেলাগুলোর অনেক এলাকা রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, রেড জোন চিহ্নিত এলাকায় পুরো লকডাউন করে দেয়া হবে। এ জোনের কেউ বাইরে যেতে বা বাইরে থেকে কেউ এ জোনের ভেতরে যেতে পারবে না। এ জোনের দোকানপাট, বিপণিবিতান, সরকারি-বেসরকারি কার্যালয় সব বন্ধ থাকবে। এমনকি রেড জোন এলাকার মুসল্লিদের মসজিদে না গিয়ে ঘরে নামাজ আদায় করতে অনুরোধ করেছে সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়।
ছামির মাহমুদ/এমএসএইচ