রোগীকে মাস্ক পরাতে গিয়ে হাসপাতালের কর্মচারী করোনা আক্রান্ত
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারের পরীক্ষায় নতুন ২৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে যশোরের ৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১১ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে।
এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তে সংখ্যা ১৮২ জন। সুস্থ হয়েছে ১০০ জন। নতুন করে আক্রান্ত ১১ জনের মধ্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালের কর্মচারী স্বপন দাস (৪০) রয়েছেন। তিনি চৌগাছা শহরের ঋষিপাড়ায় নিজ বাসভবনে বসবাস করেন।
রোগীকে সেবা দিতে গিয়েই তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন জানিয়ে স্বপন দাস জানান, চারদিন আগে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি একজন ক্রিটিক্যাল রোগীকে মাস্ক পরাতে গেলে হাঁচি দেন। ওইদিন রাত থেকেই তার জ্বর জ্বর ভাব ও কিছুটা গলায় ব্যথা ছিল। পরে হাসপাতালের অন্যদের সাথে বুধবার তিনি করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। তার নমুনা পাঠানো হয় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টারে।
সেখানে গতকাল বৃহস্পতিবারের পরীক্ষায় তার নমুনা পজিটিভ হয়। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে হাসপাতাল থেকে তাকে মোবাইল ফোনে বাড়িতে আইসোলেশনে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়। স্বপন ধারণা করছেন, ওই রোগীর হাঁচি থেকেই তিনি সংক্রমিত হয়েছেন।
স্বপনের প্রতিবেশীরা জানান, করোনা নিয়েই স্বপন বুধ ও বৃহস্পতিবার চৌগাছা থেকে মোটরসাইকেলে যশোরে গিয়ে হাসপাতালে ডিউটি করেছেন। স্বপন নিজের বাড়িতে বিভিন্ন রোগীর ড্রেসিংসহ নানা চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এই দুদিনও সকালে ও রাতে তিনি একইভাবে অন্তত ২০-৩০ জন রোগীকে নিজ বাড়িতে ড্রেসিং করেছেন ও চিকিৎসা দিয়েছেন।
শুক্রবার সকালেও মোটরসাইকেলে চৌগাছা শহর ঘুরেছেন স্বপন। তার সাথে ছেলেও ছিল। চৌগাছা বাজার থেকে সবজিসহ নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী ক্রয় করে বাসায় গেছেন। এরপর বেলা ১১টার দিকে যশোর হাসপাতাল থেকে তাকে ফোন করে করোনা পজিটিভ জানানোর পর তিনি বাড়িতে অবস্থান করছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার চৌগাছা হাসপাতালের আয়া ও স্বপনের স্ত্রী ওটিতে আয়া হিসেবে ডিউটি করেছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।
চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার জানিয়েছেন, স্বপন যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের স্টাফ এবং তার স্ত্রী আমার চৌগাছা হাসপাতালের আয়া। খবর পেয়ে মোবাইলে তাকে বাড়িতে থাকার জন্য বলেছি। স্বপনের স্ত্রী বৃহস্পতিবারও হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) ২-৩টি অপারেশনে চিকিৎসকদের সহযোগী ছিলেন। আমার অফিসেও এসেছিলেন। শনিবার সকালেই তার পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করে তার বাড়িও লকডাউন করা হবে।
মিলন রহমান/এমএএস/পিআর