ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

চিকিৎসকের এক ভুলে করোনার ঝুঁকিতে অর্ধশতাধিক

নিজস্ব প্রতিবেদক | খুলনা | প্রকাশিত: ০৫:১৬ পিএম, ০১ জুন ২০২০

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফ্লু কর্নারে ভর্তি চারজন রোগীকে করোনা আক্রান্ত নয় বলে ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেন ফোকাল পারসন ডা. শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস।

তার কথার ওপর ভিত্তি করে ফ্লু কর্নারের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ওই চারজনকে মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেন। একদিনই পরই খুমেক হাসপাতালের ল্যাব থেকে জানানো হয় ওই চারজন করোনায় আক্রান্ত। এতে করে মেডিসিন ওয়ার্ডের অর্ধশতাধিক রোগী, চিকিৎসক-নার্সসহ শতাধিক রোগীর স্বজন পড়েছেন করোনার ঝুঁকিতে। ইতোমধ্যে চিকিৎসক-নার্সসহ ১০ জনের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, খুমেক হাসপাতালের করোনা সাসপেক্ট আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কিবরিয়া, নগরীর শেখপাড়া এলাকার একই পরিবারের সদস্য আসলাম, তার স্ত্রী হালিমা আক্তার এবং ১১ বছরের সন্তান সান।

২৮ মে বিভিন্ন সময়ে তারা এ ওয়ার্ডে ভর্তি হন। ২৯ মে সকালে তারা করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। ৩০ মে সন্ধ্যায় ওয়ার্ডের ফোকাল পারসন ও মুখপাত্র জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ওই চারজনের করোনা নেই বলে নিশ্চিত করেন। সেই সঙ্গে মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠানোর নির্দেশ দেন তাদের।

তার কথামতো ওই চারজনকে মেডিসিন ইউনিট-১ এ পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যান আসলাম, হালিমা ও সান। পাশাপাশি কিবরিয়া সেখানে ভর্তি থাকার পাশাপাশি চিকিৎসা নিতে থাকেন। তাকে চিকিৎসা দেন ডা. সঞ্জয়, ডা. চিন্ময়সহ বেশ কয়েকজন নার্স।

এরই মধ্যে রোববার (৩১ মে) দুপুরে খুমেকের পিসিআর ল্যাব থেকে জানানো হয়, ওই চারজনই করোনায় আক্রান্ত। এরপর পুরো ওয়ার্ডে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর কিবরিয়াকে করোনা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে অনেক রোগী ও তার স্বজনরা হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। সেই সঙ্গে দুইজন চিকিৎসক ও নার্সদের আইসোলেশনে পাঠানো হয়।

ফ্লু কর্নারে দায়িত্ব পালন করা একাধিক চিকিৎসক ও সিনিয়র স্টাফ নার্স জানান, ডা. শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস করোনার রিপোর্ট হাতে না পেয়ে এর আগেও বেশ কয়েকবার অনুমানের ভিত্তিতে রোগীদের ছুটি দিয়েছেন। অনেক রোগীকে ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাকে রিপোর্ট আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বললে নার্স ও জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সার্বিক সমন্বয়কারী ও খুলনা বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, ফ্লু কর্নারে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। ইতোমধ্যে হাসপাতাল পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের সংস্পর্শে কেউ এসে থাকলে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কোয়ারেন্টাইন ও নমুনা পরীক্ষা করা হবে।

আলমগীর হান্নান/এএম/জেআইএম