পূজার সাজে সেজেছে আগরতলা
সনাতন ধর্মালম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আজ মহাসপ্তমী। সার্বজনীন এ দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী দেশ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা এখন সেজেছে বর্ণিল সাজে।
শহরজুড়ে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করেছে আগরতলা পৌরসভা। আর তাই রঙ-বেরঙের ঝারবাতি আর ফ্ল্যাগ লাইটের আলোতে এখন আলোকিত হয়ে ওঠেছে পুরো আগরতলা শহর।
আগরতলা শহরের বেশিরভাগ পূজা মণ্ডপের গেট সাজানো হয়েছে লাল-নীল বাহারি রঙের ঝারবাতি দিয়ে। এসব গেটের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেচু অব লিবার্টির মতো ঐতিহাসিক কিছু সস্থাপনাও রয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত আগরতলা পৌর শহরের নেতাজি সুভাষ রোড, শান্তিপাড়া, জয়গুরু, কামান চৌমুহনি, দুর্গা চৌমুহনী, শংকর চৌমুহনি, কের চৌমুহনিসহ বেশ কয়েকটি এলাকার পূজা মণ্ডপগুলোতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শুধু ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষই নয় বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের পর্যটকরাও ভিড় জমাচ্ছেন দেবী দুর্গার মণ্ডপগুলোতে।
কয়েকজন দর্শানার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা জাগো নিউজকে জানান, এ বছর দুর্গা মায়ের কাছে আমাদের প্রার্থনা থাকবে ভারতবর্ষ তথা সারাবিশ্বের মানুষ যেন সুখে-শান্তিতে বসবাস করেন এবং সকলের সঙ্গে সৌহার্দ্য আর সম্প্রীতির মেলবন্ধন যেন অটুট থাকে।
এদিকে দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে সন্ধ্যা ৭টার পর থেকেই আগরতলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে যান চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ বছর পুরো ত্রিপুরা রাজ্যের ৮টি জেলায় মোট দুই হাজার ৫১০টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা ও আগরতলা শহরে ৭৩০টি, ত্রিপুরা দক্ষিণ জেলায় ২৫১টি, ত্রিপুরা উত্তর জেলায় ২৩০টি, সীপাহিজলা জেলায় ৩২১টি, গোমতি জেলায় ২৭৫টি, উনুকোটি জেলায় ১৬৩টি, খোয়াই জেলায় ৩০৪টি এবং ধলাই জেলায় ২৩৬টি মণ্ডপ রয়েছে।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে পুরো ত্রিপুরা রাজ্যজুড়ে নেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তায় ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস্ ও লোকাল পুলিশের দুই হাজার সদস্য কাজ করছেন। এছাড়া সীমান্তর্তী এলাকার পূজা মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তার জন্য ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে রাজ্য সরকার।
এ ব্যাপারে ত্রিপুরা রাজ্য পুলিশের মুখপাত্র নেপাল দাস সাংবাদিকদের জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। বড় পূজা মণ্ডপগুলোতে একাধিক ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানো হয়েছে এবং ওয়াচ টাওয়ার থেকে নিরাপত্তা রক্ষীরা দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া যে কোনো ধরণের অভিযোগ জানাতে রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে ২৫টি পুলিশ সহায়তা কেন্দ্রও খোলা হয়েছে।
এমএএস