নিয়ম ভেঙে থানায় প্রীতিভোজ, সমালোচনার ঝড়
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মাদারীপুর সদর থানায় প্রীতিভোজের আয়োজন করায় সমালোচনার ঝড় বইছে। ওই আয়োজনে অংশ নেন খোদ মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান। শুধু তাই নয় প্রীতিভোজে অংশ নেন জেলার রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ীরাও।
ঈদের দিন (সোমবার) দুপুরে সদর থানার সামনে লাল-নীল রঙয়ের কাপড়ে মোড়ানো প্যান্ডেলে এ প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়। এরই মধ্যে প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে পুলিশ বিভাগের এমন কর্মকাণ্ডে জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ মে মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি ঈদুল ফিতর উদযাপন নিয়ে একটি সভা করে। সভায় মাদারীপুর ২ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় করোনা প্রতিরোধে নানা পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়। সেখানে বলা হয়, ঈদে কোনো ধরনের বেড়ানো ও অনুষ্ঠান আয়োজন করা যাবে না।
অথচ সেই পদক্ষেপ আমলেই নেইনি মাদারীপুর সদর থানা পুলিশ। ঈদের দিন দুপুর ১টার দিকে সদর থানার সামনে প্যান্ডেল বসিয়ে শতাধিক লোকের অংশগ্রহণে প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়। সেখানে সামাজিক দূরত্ব না মেনে গায়ে গা লাগিয়ে প্রীতিভোজে অংশ নেন রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। প্রীতিভোজের সামনের সারিতে বসেছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নানসহ পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তারা।
জেলার সচেতন ব্যক্তিরা মনে করছেন, পুলিশের হাই কমান্ড থেকে অনুষ্ঠান আয়োজন নিষেধ করলেও মাদারীপুর জেলা পুলিশ বিষয়টি আমলে নেয়নি।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি খান মো. শহীদ বলেন, সরকার করোনাভাইরাসরোধ প্রতিরোধে যেসব নিয়ননীতি নির্ধারণ করেছে সেটা ব্যক্তি হোক বা প্রতিষ্ঠান হোক মান্য করা উচিত। যদি কেউ নিয়ন না মেনে অনুষ্ঠান করে সেটা অবশ্যই নিয়ন ভঙের শামিল। তাদেরও আইনের আওতায় আসা উচিত।
প্রীতিভোজ আয়োজনের বিষয় মাদারীপুর সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল হাসান মিঞা বলেন, ‘ঈদের দিন আমাদের সকল সদস্যদের নিয়ে প্রীতিভোজের আয়োজন করি। সেখানে কয়েকজন ব্যক্তিবর্গ আমাদের শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলেন, তাদেরও আমরা প্রীতিভোজে অংশগ্রহণ করিয়েছি। এটা নিয়ে আমি আর কোনো কথা বলতে চাই না।’
অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি।
তবে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসানকে অনুষ্ঠানের বিষয় প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘জি, এর দায়ভার জেলা পুলিশ সুপারের।’
এ কে এম নাসিরুল হক/আরএআর/পিআর