স্থানীয় ও রোহিঙ্গাদের চিকিৎসায় উখিয়ায় বিশেষায়িত কোভিড-১৯ হাসপাতাল
বিশ্ব মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাব কক্সবাজারে ক্রমে বাড়ছে। ছড়িয়ে পড়ছে মানবিক আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও। গত ৫ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ রোহিঙ্গা। ইতোমধ্যে করোনা পজিটিভ এসেছে টেকনাফের স্থানীয় ৯ জন, উখিয়ার ৩২ জনের। তাই করোনা আক্রান্ত উখিয়া-টেকনাফের স্থানীয় ও রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে উখিয়ায় ১৫০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার ও বিশেষায়িত হাসপাতাল উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ মে) দুপুরে উখিয়ায় ইউএনএইচসিআর, ব্র্যাক ও রিলিফ ইন্টারন্যাশনালের উদ্যোগে স্থাপিত হাসপাতালটির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, পর্যটন নগরী কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা মানবিক আশ্রয়ে রয়েছেন। কক্সবাজারের স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি আশ্রিত রোহিঙ্গাদের করোনার প্রভাব থেকে বাঁচাতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। উপজেলা ভিত্তিক আইসোলেশন সেন্টার চালু করা হয়েছে। ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট বিশেষায়িত এ হাসপাতালটির মাধ্যমে স্থানীয় ও রোহিঙ্গাদের সেবা প্রাপ্তি অনেকটা নিশ্চিত হবে। চিকিৎসার আশায় থাকার পরিবর্তে করোনা সংক্রমণ থেকে আত্মরক্ষায় সবাইকে আরো সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক।
উখিয়া ডিগ্রি কলেজের দক্ষিণ পাশে প্রায় ৩ একর জমির উপর কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে এই কোভিড হাসপাতালটি তৈরি করা হয়েছে। সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাসপাতালটির কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাই কমিশনের (ইউএনএইচসিআর) অর্থায়নে এই বৃহৎ আকারের আধুনিক করোনা আইসোলেশন হাসপাতালটি গত ৩০ মার্চ নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছিল।
এ সময় হাসপাতালটিতে অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান ইউএনএইচসিআর’র কক্সবাজার অফিসের হেড অব অপারেশন ইনাকু টুকি, কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, আরআরআরসি অফিসের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, উখিয়ার ইউএনও মো. নিকারুজ্জামান, ওসি মর্জিনা আকতার মর্জু, উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রঞ্জন বড়ুয়া রাজন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ও রিলিফ ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কর্মকর্তা (আরআরআরসি) মাহবুব আলম তালুকদার জানান, করোনা আক্রান্ত কোনো রোগী স্বাস্থ্য বিভাগ রেফার করলেই কেবল উখিয়া কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত হাসপাতালটির সকল চিকিৎসক, নার্স, মিডওয়াইফ, স্বাস্থ্যকর্মী, অ্যাম্বুলেন্স, খাদ্যসহ মাসিক সকল ব্যয়ভার ইউএনএইচসিআর কর্তৃপক্ষ বহন করবে। এ হাসপাতালে আপাতত শুধুমাত্র করোনা ভাইরাস রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। কক্সবাজারে এটি প্রথম পরিপূর্ণ একটি করোনা আইসোলেশন হাসপাতাল।
সায়ীদ আলমগীর/এফএ/এমএস