প্রশংসনীয় ভূমিকায় ‘ডু সামথিং ফাউন্ডেশন’
করোনা সংকটে সমগ্র বিশ্ব এখন বিপর্যস্ত।পুরো দুনিয়ার ন্যায় বাংলাদেশের অর্থনীতিও এখন স্থবির হয়ে পড়েছে। এ সংকটে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন নিন্মআয়ের মানুষজন।চলমান লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তারা।
এসব কর্মহীন মানুষদের বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছে চিকিৎসকদের সামাজিক সংগঠন ‘ডু সামথিং ফাউন্ডেশন’।
সংগঠনটি গত ১৫ মার্চ থেকে নানামুখী উদ্যোগ হাতে নিয়েছে করোনাকে কেন্দ্র করে।যার মধ্যে অনলাইনে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা, খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ, সচেতনামূলক লিফলেট বিতরণ, মাস্ক বিতরণ, চিকিৎসকদের পিপিই এবং খাবার সরবরাহ, বিনামূল্যে সবজি বাজার, বিভিন্ন জায়গায় ছাগল জবাই করে গরিব মানুষের মধ্যে বিতরণ করা, বিভিন্ন মাদরাসায় এতিম ছাত্রদের ইফতার ও সেহরির দায়িত্ব গ্রহণ করা এবং বিভিন্ন জায়গায় নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে সংগঠনটির মাধ্যমে।
মার্চ মাস থেকে শুরু হওয়া এ উদ্যোগে এখন পর্যন্ত ঢাকার মিরপুর, কল্যাণপুর, শ্যামলি, ফার্মগেট, আসাদগেট, শেরেবাংলা নগর এবং ঢাকার বাইরে সাভার, মানিকগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, টাঙ্গাইল, বরগুনা, বরিশাল, নওগাঁ ও ঠাকুরগাঁও জেলায় সাত হাজার অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তির দেয়া অনুদানে ১০টি ছাগল জবাই করে গরিব মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। লকডাউনে সবাই বাসায় ফিরলেও এতিমদের কোথাও যাওয়ার জায়গা ছিল না। বিভিন্ন জেলায় থাকা এ রকম ৩৫০ জন এতিম ছাত্রের ইফতার এবং সেহরির দায়িত্বও নেয়া হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।
এসব নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা হয় ‘ডু সামথিং ফাউন্ডেশন'র চেয়ারম্যান ডা. কাজী আয়শা সিদ্দীকার সঙ্গে।
তিনি বলেন, মার্চের মাঝামাঝি থেকে আমরা করোনা সংকটে খাদ্যাভাবে থাকা মানুষগুলোর জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করি। ধীরে ধীরে আমাদের কর্মসূচির ব্যাপ্তি বাড়তে থাকে। বিভিন্ন হাসপাতালে ডাক্তার এবং নার্সদের খাদ্য প্রদান করা, মধ্যবিত্তদের বাসায় খাবার পৌঁছে দেয়াসহ নানাবিধ কাজ করে যাচ্ছি আমরা। আমরা মনে করছি, করোনা সংকট দ্রুত কাটবে না, অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে স্থায়ীভাবে।করোনা পরবর্তী এসব ভাবনাও আমরা মাথায় রেখে কাজ গুছিয়ে নিচ্ছি।ইতোমধ্যে ডু সামথিং ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুর্নবাসন কর্মসূচির আওতায় বাড়ি নির্মাণ, ছাগল বিতরণ শুরু হয়েছে।আমাদের লক্ষ্য আছে ১০০টি পরিবারকে পুর্নবাসন করার। ইনশাল্লাহ আমরা সেটি করবো।
ডা. কাজী আয়শা সিদ্দীকা বলেন, শুধু করোনাকালীন সময় নয়, দেশের যেকোনো দুর্যোগে আমরা দীর্ঘদিন ধরেই অসহায় দুস্থদের পাশে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা চাই সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে অসহায়দের পাশে দাঁড়ালে হয়তো একদিন এদেশের অসহায়দের অসহায়ত্ব দূর হবে। সেদিনই স্বার্থক হবে ‘ডু সামথিং ফাউন্ডেশন’র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
সংগঠনটির সক্রিয় একজন সদস্য ডা. নাজমুল ইসলাম। জাগো নিউজের কথা হয় তার সঙ্গেও।তিনি জানালেন, ‘ডু সামথিং ফাউন্ডেশন’র চেয়ারম্যানের আন্তরিকতা এবং দক্ষতায় এ পর্যন্ত অসংখ্য অসহায় মানুষকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। সম্প্রতি, করোনাকাল ও রমজান উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলায় অসহায়দের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবাবের পাশাপাশি ঈদসামগ্রীও দেয়া হয়েছে।যেন এ দুর্যোগেও তারা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদুল ফিতরের স্বাদ গ্রহণ করে।
তিনি বলেন, আমরা সব সময় চেষ্টা করি প্রকৃত অসহায়দের খুঁজে সহযোগিতা করার। বিভিন্নভাবে ওইসব মানুষের তথ্য সংগ্রহ করে নিজে অথবা আমাদের বিশ্বস্তকর্মীদের মাধ্যমে তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। আশা রাখি এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
এমএএস/জেআইএম