ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

প্রেমিকের স্বীকারোক্তি : প্রেমিকার পরামর্শেই তার বাবাকে হত্যা

প্রকাশিত: ০১:০৩ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০১৫

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বাহিমালিতে মেয়ের পরকীয়া প্রেমে বাঁধা দেয়ার কারণেই বাবাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নিজের মেয়ের পরামর্শে পরকীয়া প্রেমিক ও তার সহযোগির গুলিতে কৃষক আব্দুল মোতালেব হোসেন শেখ (৫৫) খুন হন।

পুলিশের হাতে আটক পরকীয়া প্রেমিক মজনু প্রামাণিক আদালতে এমনই জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিআইডি পুলিশ এ ঘটনার অপর আসামিদের আটকে অনিহা দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

মজনু প্রামাণিকের আদালতে দেয়া জবানবন্দি সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাহিমালি গ্রামের মোতালেব শেখের মেয়ে একই এলাকার কুমরুল গ্রামের জাহাঙ্গীরের স্ত্রী মর্জিনা বেগমের (২৭) সঙ্গে প্রায় ১০ বছর আগে প্রতিবেশি মোবারক হোসেন ওরফে কাচন প্রামাণিকের ছেলে মজনু প্রামাণিকের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে।

এক পর্যায়ে মর্জিনা তার স্বামী জাহাঙ্গীরকে তালাক দিয়ে মজনুকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু এতে বাধ সাধেন মর্জিনার বাবা মোতালেব শেখ। মর্জিনা তার পরকীয়া প্রেমিক মজনুকে পেতে দিশেহারা হয়ে উঠে এবং মজনুর সঙ্গে পরামর্শ করে তার বাবাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে মজনু বাহিমালি গ্রামের ছেতের আলীর ছেলে রায়হানকে বিষয়টি জানায় এবং তার কাছ থেকে জমি বিক্রির ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ৫ রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল কিনে।

পরামর্শ অনুযায়ী গত ৬ এপ্রিল রাত ১টার দিকে মোতালেব শেখের বাড়িতে গিয়ে রায়হান মোতালেবকে ডাক দেয়। পরিচিত কণ্ঠ শুনে মোতালেব ঘর থেকে বেরিয়ে এলে রায়হান তার বুকে একটি গুলি করে। এ সময় মজনু পিস্তলটি নিয়ে পেটে আরেকটি গুলি করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। মোতালেবের স্ত্রী মঞ্জুয়ারা বেগম চিৎকার করলে তারা ফাঁকা গুলি করে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়।

গত শনিবার মর্জিনা পুলিশের কাছে তার প্রেমিক মজনুর বিরুদ্ধে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ করে। এতে পুলিশ তাকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করলে মজনু দোষ স্বীকার করায় বিচারক তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।

এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মজনু বাহিমালি গ্রামের ছেতের আলীর ছেলে রায়হান ও তার পরকীয়া প্রেমিকা মর্জিনা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে কৃষক মোতালেব শেখকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে বিকেলে পুলিশ নাটোরের আদালতে মজনুকে জবানবন্দি দেয়ার জন্য নিয়ে যায়।

এসময় মর্জিনা বেগম আদালত চত্বরে উপস্থিত থাকলেও পুলিশ তাকে আটক করেনি। আটক মজনু আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মর্জিনা ও রায়হানের নাম প্রকাশ করলেও পুলিশ অজ্ঞাত কারণে তাদেরকে আটক না করায় এলাকাবাসীর মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এর আগে গত ৬ এপ্রিল রাতে ঘুম থেকে ডেকে তুলে কৃষক মোতালেব হোসেন শেখকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পরদিন অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়।

সোমবার বিকেলে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির অর্গানাইজড প্রাইম পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক খান আটক মজনুর দেয়া স্বীকারোক্তির সত্যতা নিশ্চিত করে এই প্রতিবেদককে বলেছেন, তারা অভিযুক্ত রায়হানকে আটকের চেষ্টা করছেন। আইনগত কিছু জটিলতা ও নানা বিবেচনায় নিহতের মেয়ে পরকিয়া প্রেমিকা মর্জিনা বেগমকে এখনই সিআইডি আটকের চিন্তা করছে না। মামলা আরো সামনের দিকে গেলে পরে মর্জিনা বেগমের বিষয়ে সিন্ধান্ত নেয়া হবে।

রেজাউল করিম রেজা/ এমএএস/পিআর