ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সিরাজগঞ্জে মার্কেটে ভিড়, মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

জেলা প্রতিনিধি | সিরাজগঞ্জ | প্রকাশিত: ১২:৩৪ পিএম, ১৪ মে ২০২০

করোনাভাইরাস আতঙ্কের লেশমাত্র নেই সিরাজগঞ্জের মার্কেটগুলোতে। মানা হচ্ছে না শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি। করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে গায়ে গা লাগিয়ে মার্কেটগুলোতে চলছে বেচাকেনা।

বৃহস্পতিবার (১৪ মে) সকালে সিরাজগঞ্জ শহরের প্রধান নিউ মার্কেটসহ এসএস রোডের ছোট-বড় বিপণিবিতানগুলোতে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে সিরাজগঞ্জের মার্কেটগুলোতে একে অপরের গায়ে গা লাগিয়ে পোশাকসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনছে মানুষ। ক্রেতাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েও ব্যর্থ হচ্ছেন দোকানিরা। তবে ক্রেতাদের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা অনেক কম।

নিউ মার্কেটে পোশাক কিনতে আসা সুলতানা ইয়াসমিন বলেন, ঈদের আর বেশি দেরি নেই। ছেলে-মেয়েদের পোশাক তো কিনতেই হবে। তাই করোনার ভয় উপেক্ষা করেই মার্কেটে এসেছি।

market

হায়দার আলী, সাচ্চু এফ রহমান, আমজাদ আলী, সোহেল মিয়া, আফরোজা খাতুনসহ একাধিক ক্রেতার কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, করোনা আতঙ্কে আর কতোদিন বসে থাকবো। মুখে মাস্ক পরেই আমরা কেনাকাটার জন্য বেরিয়েছি।

শারীরিক দূরত্বের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, এতো লোকের ভিড়ে দূরত্ব থাকে না। সবাই তাড়াতাড়ি নিজের কেনাকাটা করতে দোকানে ভিড় জমায়।

তৈরি পোশাক বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম ও নুরুল হক বলেন, দোকানে দূরে দূরে বসার জন্য টুল পেতে দিয়েছি। তারপরও বেশি ভিড় জমলে টুলে বসার মতো অবস্থা থাকে না।

শাড়ি ও থ্রি-পিস বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ভাই ভাই ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী বাঞ্ছারাম পোদ্দার বলেন, আমরা কাস্টমারদের দূরে থাকার জন্য বললেও তারা সেটা মেনে চলছে না। এতে আমাদেরও সমস্যা হচ্ছে। ভিড় জমলে আমাদের কিছু করার থাকে না।

market

সায়মা কসমেটিক স্টোরের মালিক সোহেল রেজা বলেন, দোকানের সামনে ক্রেতাদের দাঁড়ানোর জন্য তিন ফুট দূরে চুন দিয়ে গোল চিহ্ন দিয়েছি। সেগুলো মানছেই না ক্রেতারা।

নিউ মার্কেটের রওশন অ্যান্ড ব্রাদার্সের প্রোপাইটর রওশন হেলাল ও শিহাব ক্লথ স্টোরের স্বত্বাধিকারী আব্দুল হাকিম বলেন, দোকানগুলোতে ভিড় থাকলেও বেচাকেনার পরিমাণ কম। অন্য ঈদের তুলনায় বিক্রি একেবারেই নগণ্য। ক্রেতারা ভিড় জমিয়ে দাম জিজ্ঞেস করেই চলে যান।

সূচিত্রা ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী বাবু দিলীপ কুমার বলেন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জীবানুনাশক স্প্রে দোকানে রেখেছি। গ্রাহকদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুতে বলা হচ্ছে এবং কিছুক্ষণ পর পর বসার আসনগুলোতে জীবানুনাশক স্প্রে দেয়া হচ্ছে।

এদিকে শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কেনাকাটা করায় জেলায় করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।

market

সিরাজগঞ্জ স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নব কুমার কর্মকার বলেন, মার্কেট ও রাস্তাঘাটে প্রচুর মানুষ ভিড় করছে। কোনো প্রকার শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা হচ্ছে না। এতে করোনার সংক্রমণ বাড়তে পারে।

কারিগরি শিক্ষক সমিতি সিরাজগঞ্জের সভাপতি অধ্যক্ষ শরীফুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত সিরাজগঞ্জে তেমন করোনা সংক্রমণ দেখা যায়নি। তবে ঈদের মার্কেটের ভিড় আমাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে।

সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, সরকারি নির্দেশে মার্কেট খোলা হলেও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। শহরের প্রধান সড়ক এসএস রোডের সঙ্গে সংযুক্ত সকল লিংক রোড বন্ধ করা হয়েছে। ক্রেতারা একটি সড়ক দিয়েই যাতায়াত করতে পারবে। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মার্কেটগুলোতে পুলিশি টহল জোরদার করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে মাইকিং করা হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমাদের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট ও বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতির সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাবেচার জন্য বলা হয়েছে। তারপরও তারা এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। অবস্থা বেগতিক হতে থাকলে আমাদের বিকল্প কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

ইউসুফ দেওয়ান রাজু/আরএআর/জেআইএম