প্রতিবন্ধকতা থামাতে পারেনি সাবিনার গতি
শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় থামাতে পারেনি দশম শ্রেণির ছাত্রী সাবিনা খানমের গতি। শারীরিক ও আর্থিক প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে মনের প্রবল ইচ্ছা শক্তি দিয়ে শিক্ষার্জনের জন্য লড়াই করছে সাবিনা। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতেই যুদ্ধ তার। ভূমিহীন পরিবারে জন্ম তার।
গরিব দিনমজুর রব শেখের বড় মেয়ে সাবিনা খামন জেলার সালথা উপজেলার ফুলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। পরিবারের পাঁচজনের মধ্যে সাবিনা ও তার ছোটবোন বিথী এবং বাবাসহ তিনজনই শারীরিক প্রতিবন্ধী। উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের বিষ্ণুদী গ্রামে তাদের বসবাস।
সাবিনা খানম জাগো নিউজকে জানান, প্রতিবন্ধী পরিবারেই আমার জন্ম। জন্মের পর থেকেই দুই পায়ে সমস্যায় থাকায় স্বাভাবিকভাবে চলাফেলা করা পারিনা। আমাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। বাবার আয়-রোজগার না থাকায় সংসার চালতে হিসশিম খেতে হয় তাকে। তারপরও বাবার মুখের দিক তাকিয়ে সেটা আমাকে মেনে নিতে হয়। বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার পথ খুড়িয়ে খুড়িয়ে হেটে স্কুলে যাওয়া আসা আমার জন্য খুবই কষ্টকর। শুধুমাত্র মনের ইচ্ছাশক্তি দিয়েই আমি পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছি।
সাবিনার বাবা মো. রব শেখ জানান, সে শারীরিকভাবে অত্যান্ত খাটো। সবকাজ ভালোভাবে করতে পারে না বলে কেউ কাজেও নিতে চায় না। পাঁচ শতাংশ জমিতে বাড়ি ছাড়া তার আর কিছুই নেই। তিন ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে বিয়ে করেছে। মেঝো ছেলে কওমী মাদরাসায় লেখাপড়া করে। ছোট ছেলের লেখাপড়ার বয়স হয়নি।
দুই মেয়েই জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী। বড় মেয়ের দুটি পা’ই বাঁকা। সে স্বাভাবিকভাবে হাটতে পারে না। আর ছোট মেয়ে বিথী খানম বিষ্ণুদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। বয়সের তুলনায় সে বেড়ে উঠছে না। প্রতিবন্ধী ভাতা পান কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে জানায়, সে প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী।
ফুলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী জাগো নিউজকে জানান, হতদরিদ্র পরিবারের শারীরিক প্রতিবন্ধী স্কুলছাত্রী সাবিনা খানমের দু’টি পা বাঁকা। এতে সে স্বাভাবিকভাবে হাটতে পারে না। তার যাতায়াতের জন্য প্রয়োজন একটি হুইল চেয়ারের। এতো প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ রয়েছে তার।
এসএম তরুণ/বিএ