ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

দেড় মাসেও পায়নি কোনো ত্রাণ, হুইপকে ফোন দিল প্রতিবন্ধী পরিবার

জেলা প্রতিনিধি | দিনাজপুর | প্রকাশিত: ০৩:৫৬ পিএম, ০৯ মে ২০২০

পরিবারের পাঁচ সদস্যের তিনজনই প্রতিবন্ধী। একদিকে করোনার আতঙ্ক অন্যদিকে ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করে কষ্টে দিনাতিপাত করছিলেন এই পরিবারের সদস্যরা। অবশেষে মুঠোফোনে তাদের কষ্টের কথা জাতীয় সংসদের হুইপকে জানান। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে নতুন কাপড় ও ত্রাণ সহায়তা হাতে পান এই পরিবারের সদস্যরা। এসব সহায়তা পেয়ে ঈদের আগেই ঈদ আনন্দে ভাসছেন তারা।

দিনাজপুর সদর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম জালালপুরের শাহাপাড়ার স্বল্প আয়ের রেজাউল ইসলামের স্ত্রী আহেদা আকতারসহ পাঁচজনের সংসার। ছেলে জুয়েলের বয়স ৩৪, মেয়ে রোজিনা আক্তারের বয়স ২৫ এবং ছোট ছেলে রোহানের বয়স ১৪।

তিন সন্তান জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী। ছোট ছেলে রোহান সারাক্ষণ শুয়েই থাকে। ঠিকমতো বসতেও পারে না। তাদের বাবা দোকানের কর্মচারী। বেশ কিছু দিন আগে দুর্ঘটনায় পা ভেঙে পঙ্গু হয়ে যান বাবা। বাবার আয় আর ভাই-বোনের প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়ে কোনোমতে চলছিল তাদের সংসার।

কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রভাবে বাবা রেজাউল ইসলামের রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে যায়। চরম সঙ্কটে পড়ে তার পরিবারের সদস্যরা। গত দেড় মাসেও কোনো ধরনের ত্রাণ সহায়তা পায়নি পরিবারটি। এ অবস্থায় ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে পরিবারের কষ্টের কথা মুঠোফোনে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমকে জানান প্রতিবন্ধী রোজিনা আক্তার।

তাদের কষ্টের কথা জানার পর কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে চাল-ডাল, লবণ, তেল, সেমাই, চিনি ও পরিবারের সদস্যদের জন্য ঈদের নতুন কাপড়সহ যাবতীয় ত্রাণসহায়তা অসহায় পরিবারে পৌঁছে দেন হুইপ ইকবালুর রহিম। ত্রাণসহায়তা ও ঈদের কাপড় পেয়ে খুশি হন এই পরিবারের সদস্যরা।

সদর উপজেলার ৮ নম্বর শংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ইসাহাক আলী বলেন, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম আমাকে ফোন করে ওই প্রতিবন্ধী পরিবারকে ত্রাণসহায়তা দিতে বলেছেন। সেই সঙ্গে হুইপের দেয়া ঈদের কাপড়, চাল, ডাল, লবণ, তেল, সেমাই ও চিনিসহ ১৭ ধরনের ত্রাণ তাদের পরিবারে পৌঁছে দিয়েছি আমি।

করোনায় এই প্রথম খাদ্যসামগ্রী ও নতুন কাপড় পেয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিন প্রতিবন্ধীর মা আহেদা আক্তার বলেন, আমাদের খোঁজ রাখে না কেউ। করোনা শুরুর পর থেকে অনেক কষ্টে দিনযাপন করছি আমরা। শেষে হুইপকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায় মেয়ে। পরে আমাদের জন্য ত্রাণ ও নতুন কাপড় পাঠানো হয়।

প্রতিবন্ধী জুয়েল বলেন, করোনার আতঙ্কে আমরা কেউ বাড়ি থেকে বের হই না। অসুস্থ বাবার আয় না থাকায় দিশেহারা আমরা। বাড়িতে খাবার না থাকায় বাধ্য হয়ে প্রতিবন্ধী বোন রোজিনা মুঠোফোনে বিষয়টি হুইপ ইকবালুর রহিমকে জানায়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ত্রাণসহায়তা বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়।

এমদাদুল হক মিলন/এএম/জেআইএম