ঝুঁকি জেনেও পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন হোমিও চিকিৎসক সোহেল
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছে সাধারণ মানুষসহ চিকিৎসকরা। করোনার এই ক্রান্তিকালে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এই চিকিৎসকরাই। তাদেরই একজন পটুয়াখালী শহরের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক সোহেল। বিনামূল্যে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
৪৫ বছর আগে পটুয়াখালীর হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক আবদুল ওহাব মৃধা প্রতিষ্ঠা করেন মেসার্স জামান হোমিও ফার্মেসি। বর্তমানে আবদুল ওহাব মৃধার বয়স হয়ে যাওয়ায় তার ছেলে আবুল কালাম আজাদ (সোহেল) সেবা দিচ্ছেন।
সোহেল বলেন, করোনাভাইরাসের ঝুঁকি মোকাবিলায় পটুয়াখালী লকডাউন (অবরুদ্ধ) ঘোষণা করেছে প্রশাসন। লঞ্চ, নৌকা, রিকশা, গাড়ি বন্ধ থাকায় মানুষ আসে না। ফলে রোগীর চাপ কম। ছোটখাটো রোগ নিয়ে মানুষ ঘরে বসে থাকে। চিকিৎসকের কাছে আসতে চায় না। খুব গুরুতর অসুস্থ হলে তারপর আসে। তবে সে সংখ্যাও কম। করোনা পরিস্থিতিতে সবার মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শহরের সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা মোসা. আকলিমা বেগম বলেন, ‘২ মে হঠাৎ করেই জ্বর আসে। আমি ভয় পেয়ে যাই। করোনাভাইরাসের কারণে অনেক ক্লিনিকে ডাক্তার বসে না। সদর হাসপাতালে গেলে তো চিকিৎসকরা জ্বর শুনলে করোনার টেস্ট করাবে। তাই ভয়ে হাসপাতালে যাইনি। পরের দিন জামান হোমিও ফার্মেসিতে গিয়েছিলাম। আমার সমস্যার কথা শুনে চিকিৎসক হোমিও ওষুধ দেয়। তবে কোনো ফি রাখেনি, শুধু ওষুধের দাম রেখেছে। আমি ওই ওষুধ খাওয়ার পরে আল্লাহর রহমতে এখন সুস্থ।’
আগে প্রতিদিন ৪০-৪৫ জন রোগী জামান হোমিও ফার্মেসি থেকে চিকিৎসা নিতে আসতেন। তবে বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে সে সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ৫ থেকে ১০ জনে। হোমিও চিকিৎসক সোহেল বলেন, রমজান মাসে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেশি। এখন শরীর কড়া ও ঋতু পরিবর্তনজনিত সর্দি, জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা বেশি আসছে। কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে আসেনি। করোনাভাইরাসের উপসর্গ আছে-এমন কোনো রোগীও যোগাযোগ করেনি।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় রোগীর সুস্থতা লাভ সম্পর্কে তিনি বলেন, একজন রোগী অসুস্থতা নিয়ে যতদ্রুত আসবে ততদ্রুত সুস্থতা লাভ করবে। রোগের প্রাদুর্ভাব ও রোগীর অবস্থার ওপর সুস্থতা নির্ভর করে।
পেশার দায়বদ্ধতা থেকে রোগীদের কথা চিন্তা করে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এই হোমিও চিকিৎসক। তিনি বলেন, চেম্বার খোলা রাখি কিন্তু রোগীর সংখ্যা অনেক কম। যারা আসে তাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। আমরা চাই মানুষ সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুক। আল্লাহ যতদিন বাঁচিয়ে রাখবে, সুস্থ রাখবে রোগীর সেবা দেয়ার জন্য আমি প্রস্তুত।
মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এসআর/পিআর