কুড়িগ্রাম হাসপাতালে শিশু বদলের অভিযোগ
কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে নবজাতক শিশু বদলের অভিযোগের চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে এ গুরুতর অভিযোগ উঠায় স্বাস্থ্য প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। তিন সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটিকে ৩ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পৌরসভার নাজিরা মিয়াপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বরাবর লিখিত এ অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগে বলেন, তার স্ত্রী সুফিয়া বেগমকে প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শনিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। রোগীর সিজার করার পর কর্তব্যরত নার্সরা জানায়, সুফিয়ার ছেলে সন্তান হয়েছে। পরিবারের লোকজনের কাছে ছেলে সন্তানকে হস্তান্তরও করা হয়। শিশুটি অসুস্থ্যতা বোধ করলে শিশু বিশষজ্ঞ ডা. বিউটি বেগমকে দেখানো হয়। প্রায় ৪০ মিনিট পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. অমিত কুমার বসু ও নার্সরা এসে জানায় ছেলে সন্তানটি তার না। তার মেয়ে সন্তান হয়েছে। পরে নার্সরা ছেলে সন্তানটি কাকলী নামে আর এক মাকে দেন। এ ঘটনা সন্দেহের সৃষ্টি করে। হাসপাতাল জুড়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় নানা গুণজন। এত বড় ভুল কীভাবে হলো এ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বত্র।
সুফিয়া বেগম জানায়, অপারেশন থিয়েটারে পর পর ৫ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সবার আগে তার সিজার করা হয়। তিনি জ্ঞান ফিরে জানতে পারেন তার পুত্র সন্তান হয়েছে। এ খবর শুনে তিনি খুব খুশি হন। কারণ এর আগে তার ৩টি মেয়ে সন্তান আছে। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি চলছিল। কিন্তু তার সে সুখ বেশিক্ষণ থাকেনি। পরে নার্সরা জানায় তার মেয়ে সন্তান হয়েছে। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তারপর সুফিয়া মনে করে ছেলে-মেয়ে যাই হোক নাড়ী ছেড়া ধন। মেয়ে সন্তানকে সে আকড়ে রেখেছে। আদর করছে, যত্ন করছে। বোঝার কোনো উপায় নেই কোনটি সত্যি।
কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. অজয় কুমার রায় এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ শনিবার বিকেলে পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নজরুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের এ কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নাজমুল হোসেন/এমএএস/আরআইপি