করোনা আক্রান্ত এক নার্সের আকুতি, আমি কি না খেয়ে মারা যাব!
খুলনা ডায়াবেটিক হাসপাতালে (করোনা হাসপাতাল) ভর্তি খুমেকের এর সিনিয়র স্টাফ নার্স ও নার্সিং সুপারভাইজার শিলা রানী দাসের বাড়িতে খাবার দিতে দিচ্ছেন না এলাকার নির্বাচিত কাউন্সিলর মো. হাফিজুর রহমান ও তার সহযোগীরা।
এমনকি তার বাড়িতে অবস্থান করা একমাত্র মেয়ের ফোনও তারা বন্ধ করে দিয়েছে। তবে প্রশাসন শীলা রানীর বাড়ি লকডাউন করার বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানে না। বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজের ফেসবুক ওয়ালে তিনি এ পোস্ট দিয়েছেন।
শিলা রানী দাস তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন,
আমি শিলা রানী দাস, নার্সিং সুপারভাইজার পদে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছি। আমি স্বাধীনতা নার্স পরিষদ এর খুলনার বিভাগীয় প্রেসিডেন্ট। গত ০৪.০৪.২০২০ থেকে করোনা হাসপাতালে কর্তব্যরত ছিলাম। গত ২৮.০৪.২০২০ এ আমার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে।
এখন আমি করোনা হাসপাতালে ভর্তি আছি। আমার জন্য সকলে একটু আশীর্বাদ করবেন, আমি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে আপনাদের সবার মাঝে ফিরে আসতে পারি।
তবে খুব কষ্ট লাগছে আমাদের এলাকার কমিশনারসহ কিছু লোকের কর্মকাণ্ড শুনে। আমি যখন করোনা হাসপাতালে ভর্তি হই তখন তারা আমার বাসার কাজের লোকের বাসা লকডাউন করছে, ঠিক আছে! কিন্তু আমি একজন নিরামীষভোজী, আমার বাড়ির মানুষজন বলেছে আমার খাবারের ব্যবস্থা করতে, আমি নিজেও বলেছি। কিন্তু তারা মোবাইল ফোন বন্ধ করে দিয়েছে!
আমার সমাজের কাছে প্রশ্ন আমি রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছি এখানে আমার অপরাধটা কোথায়? আমি কি কোনো অপরাধী যে আমাকে খাবারটা পর্যন্ত দেয়া যাবে না! আমি কি না খেয়ে মারা যাব, এ কেমন বিচার?
কারা এদেরকে এলাকার মানুষের দেখা শোনার ভার দিয়েছে?
এ ব্যাপারে নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হাফিজুর রহমান নার্স শীলা রানী দাসের বাড়ি লকডাউন করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি তাদের বলেছি যে কোনো সমস্যা হলে তাকে জানাতে। তবে মোবাইল বন্ধ করার বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
এ ব্যাপারে কেএমপির কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবীর পিপিএম বার সাংবাদিকদের বলেন, আমি এ বিষয়ে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। তবে তাকে এ বিষয়ে কেউ কোনো কিছু জানায়নি বলেও তিনি জানান।
আলমগীর হান্নান/এমএএস/পিআর