ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সাইকেল চালিয়ে ঢাকা-বরগুনা যাওয়া করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি এখন সুস্থ

জেলা প্রতিনিধি | বরগুনা | প্রকাশিত: ০৬:০৯ পিএম, ২৮ এপ্রিল ২০২০

করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে সাভার থেকে সাইকেল চালিয়ে বরগুনা আসা ব্যক্তি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ১৬ দিন চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার দুপুরে তাকে সুস্থতার ছাড়পত্র দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর বরগুনার পুলিশ তাদের নিজস্ব পরিবহনে ওই ব্যক্তিকে তার নিজ বাড়ি পৌঁছে দেয়।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে গত ১২ এপ্রিল সন্ধ্যায় এই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করে বরগুনা জেলা পুলিশ। এরপর ওইদিনই তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর দুদিন পর গত ১৪ এপ্রিল তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর থেকেই বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

এ নিয়ে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পর বরগুনায় পাঁচজন রোগী এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এছাড়াও জেলায় চিকিৎসাধীন বাকি ২৩ জন রোগীও সুস্থতার পথে।

মঙ্গলবার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা এই ব্যক্তি ঢাকার সাভারের একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত ছিলেন। গত ৫ এপ্রিল তার শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়। এরপর দেশব্যাপী চলমান অঘোষিত লকডাউনের মধ্যে সাইকেলে ৭ এপ্রিল বরগুনার নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন তিনি। সাইকেলে তিনদিনের যাত্রা শেষে ১০ এপ্রিল সন্ধ্যায় বরগুনার নিজ বাড়ি পৌঁছান।

কিন্তু স্বজনদের অনুরোধ উপেক্ষা করে অসুস্থ শরীরে চিকিৎসা না নিয়ে বাড়ি আসায় তাকে ঘরে উঠতে দেননি তার স্ত্রী। এরপর শ্বশুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে এ ব্যক্তির এমন অসচেতনভাবে বরগুনা আসার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তাকে ঘিরে দেশজুড়ে নানা আলোচনা আর সমালোচনা হয়।

এদিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, অসুস্থ অবস্থায় এমনভাবে দীর্ঘপথ পাড়ি দেয়ার কারণ জানতে চাইলে লজ্জিত হন এই ব্যক্তি এবং এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

সূত্রটি আরও জানায়, করোনাভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক না থাকায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি তিনি বুঝতে পেরেও ঘাবরে গিয়েছিলেন। তাই নিরুপায় হয়ে এভাবেই স্বজনদের কাছে এসেছিলেন তিনি।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের প্রধান চিকিৎসক কামরুল আজাদ বলেন, যথাসময়ে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা পাওয়ায় এ ব্যক্তি সুস্থ হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, উপসর্গ অনুযায়ী আমরা তাকে চিকিৎসা দিয়েছি। আমাদের সাধ্য অনুযায়ী তাদের সংস্পর্শে থেকে চিকিৎসা দিয়েছি। তবে আমরা সব থেকে বেশি যা করেছি, তা হলো তাকে মানসিকভাবে সাহস জুগিয়েছি। ভেঙে পড়তে দেইনি। সবসময় উৎসাহ দিয়েছি।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. সোহরাব উদ্দিন বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি রোগীদের সাধ্যমতো সেবা দেয়ার। করোনাভাইরাসের নির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকলেও লক্ষণ দেখে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। সার্বক্ষণিক তাদের নজরদারিতে রেখেছি। এসব কারণে আমরা এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে সুস্থ করে তুলতে সক্ষম হয়েছি। এ কৃতিত্ব বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের সব চিকিৎসক, টেকনোলজিস্ট, ওয়ার্ড ইনচার্জ এবং নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের।

বরগুনায় এখন পর্যন্ত ৩০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে চারজন নারী ও তিনজন শিশু রয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন দুজন।

সাইফুল ইসলাম মিরাজ/এমএএস/এমএস