শ্বশুরবাড়িতে করোনা রোগী, এলাকায় উত্তেজনা
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতাল থেকে শ্বশুরবাড়িতে আসতে দেয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা ও ঢাকার ধামরাই উপজেলার সীমান্তবর্তী পাইকপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এক রোগী পালিয়ে শ্বশুরবাড়িতে আসেন। খবর পেয়ে সোমবার বিকেলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও ঢাকার ধামরাই উপজেলা প্রশাসন ওই এলাকায় গিয়ে মির্জাপুরের উয়ার্শী ইউনিয়নের দেওলীপাড়া দক্ষিণপাড়ার ২০টি ও ধামরাই উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের ৪০টি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করে।
তথ্য গোপন করে করোনা পজিটিভ ওই ব্যক্তি মির্জাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ধামরাই উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামে শ্বশুড়বাড়িতে অবস্থান করায় ওই বাড়িগুলো লকডাউন করা হয় বলে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেক জানিয়েছেন।
সোমবার ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামিউল হক, থানা ইনচার্জ দীপক কুমার সাহা, মির্জাপুর উপজেলা প্রশাসন উপস্থিত হয়ে আক্রান্ত ওই ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু সেখান থেকে রাতে তিনি আবার শ্বশুরবাড়িতে ফিরে আসেন।
মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় লোকজন তার উপস্থিতি টের পেলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শত শত গ্রামবাসী রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে থাকেন। খবর পেয়ে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামিউল হক ও থানা ইনচার্জ দীপক কুমার সাহা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
তারা জানান, মুগদা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে থাকতে বলে ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছেন। এছাড়া ওই বাড়ি থেকে কেউ বের হতে কিংবা প্রবেশ করতে পারবেন না। এজন্য দুইজন গ্রাম পুলিশ পাহারায় থাকবেন। দুই উপজেলার ৬০ বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন তাদের খাবার নিশ্চিত করবেন বলে তারা জানান।
উল্লেখ্য, আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলায়। তার বয়স ৪৬ বছর। তিনি রাজবাড়ী জেলায় চাকরি করেন। অসুস্থবোধ করায় গত ২৩ এপ্রিল ঢাকায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) নমুনা জমা দিয়ে টাঙ্গাইলে চলে আসেন। পরবর্তীতে জানতে পারেন তিনি করোনায় আক্রান্ত। বিষয়টি গোপন করে ২৫ এপ্রিল ধামরাই উপজেলার চৌহাট ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে আসেন।
এদিকে পাইকপাড়া গ্রাম মির্জাপুর উপজেলার দেওলীপাড়া দক্ষিণপাড়া গ্রাম সংলগ্ন হওয়ায় গ্রামটির ২০টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মালেক জানিয়েছেন।
এসএম এরশাদ/এফএ/এমকেএইচ