প্রস্তুত ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ি
বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ১২৫তম তিরোধান উৎসব আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে যাচ্ছে। শুক্রবার এ উপলক্ষে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার লালন আখড়া বাড়িতে শুরু হচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপি নানা অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলা। এ আয়োজনকে ঘিরে ছেঁউড়িয়ায় মরা কালিগঙ্গা নদীর তীরে লালন আখড়া বাড়িতে এখন সাজ সাজ রব।
ইতোমধ্যে উৎসবের সব প্রস্তুতি শেষ করেছেন আয়োজকরা। নতুন রংয়ে আচ্ছাদিত আর আলোচনা সভা ও সংগীতের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। উৎসবে যোগ দিতে বাউল ফকির আর ভক্তদের আনাগোনায় জমে উঠছে আখড়াবাড়ি।
জানা গেছে, মরমি সাধক ফকির লালন সাঁইজি ১৯৮০ সালের ১৭ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় অবস্থিত লালন আখড়া বাড়িতে দেহ সম্বরণ করেন। এ দিনটিকে তিরোধান দিবস বলা হয়। ভক্ত-শিষ্যরা দিনটি পালন করে আসছে বছরের পর বছর ধরে।
এবার পাঁচ দিনের এ উৎসবে যোগ দিতে এরই মধ্যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে বাউল তীর্থভূমি ছেঁড়িয়ার আখড়া বাড়িতে ছুটে এসেছেন সাধু-গুরু, বাউল, ভক্তরা। ছোট দলে ভাগ হয়ে দরদভরা গলায় গেয়ে চলেছেন লালনের গান। আবার কেউ বা মেতে উঠেছেন গুরুবাদি বাউল ধর্মের নিগূঢ় তত্ত্ব কথার আলোচনায়। এসেছেন দেশ বিদেশের নানা বয়সের দর্শনার্থী।
বাউল ভক্তরা বলেন, এ আয়োজনে যোগ দেয়ার জন্য বাউলদের কোনো চিঠি দেয়া হয় না, জানানো হয় না নিমন্ত্রণ। তারপরও এক অদৃশ্য সুতোর টানে এরা দলে দলে ছুটে আসেন এ বাউল ধামে। তারা মনে করেন লালনের অহিংসার বাণী বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে পারলেই কেবল সার্থক হবে সব আয়োজন।
নেমেছে তাদের ঢল। ১২৫তম তিরোধান দিবস উদযাপন করতে আখড়াবাড়িতে রং করা, ধুয়া-মুছা এবং ভরাটকৃত কালী নদীর বিস্তৃর্ণ জায়গাজুড়ে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ।
জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেন, পাঁচদিনের এ স্মরণোৎসবের সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শেষ করেছে লালন একাডেমি। এছাড়া এ উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
আল-মামুন সাগর/এআরএ/বিএ