ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

‘করোনায় আক্রান্ত, আমায় বাঁচান’ বলে কিশোরের ৪৭৩ কল

জেলা প্রতিনিধি | নাটোর | প্রকাশিত: ০৫:২২ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০২০

‘আমি করোনায় আক্রান্ত। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পালিয়ে এসেছি। বর্তমানে শ্বাসকষ্টে ভুগছি, জরুরি চিকিৎসা দরকার। আমাকে বাঁচান’— এমন তথ্য দিয়ে গত ৬ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি টোল ফ্রি পাঁচটি নম্বরে ৪৭৩ বার কল করে সাহায্যের আকুতি জানান এক কিশোর।

এতবার কল পেয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ। করোনার রোগী, যদি ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ওই কিশোরের দেয়া ঠিকানায় গিয়ে দেখা যায় সেখানে কেউ নেই। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় উদ্ধার করা হয় ওই কিশোরকে। সপ্তম শ্রেণির ওই স্কুলছাত্র একটু মজা করতে গিয়ে করোনাভাইরাস নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালান। তার ওই ‘একটু মজা’ নেয়ার ঘটনায় ঘুম হারাম হয়ে যায় প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের। যদিও কৃষকের সন্তান ওই কিশোরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।

এ সংক্রান্ত জেলা পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ‘নিছক মজা নেয়ার জন্য সপ্তম শ্রেণির ওই স্কুলছাত্র সরকারের বিভিন্ন জরুরি পরিষেবা নম্বরে ফোন করে নিজেকে আব্দুল করিম পরিচয় দিয়ে জানান, তিনি একজন করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পালিয়ে এসেছেন। বর্তমানে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, তার জরুরি চিকিৎসা দরকার।’

‘জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এরপর আব্দুল করিমকে উদ্ধারে হন্যে হয়ে মাঠে নামে। নাটোর- ২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলও উদ্ধারকারী দলসহ তাকে উদ্ধারে চেষ্টা চালান। কিন্তু ছেলেটি বারবার মিথ্যা ঠিকানা দিয়ে হয়রানি করতে থাকে। কোথাও তাকে না পেয়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে নাটোর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাতের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল নাটোর সদর উপজেলার লহ্মীপুর টলটিলিয়া পাড়া থেকে মোবাইলসহ ছেলেটিকে সেমাবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আটক করে।’

পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘আটক ছেলেটির মোবাইল সিডিআর পর্যালোচনায় দেখা যায়, ৬ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সে সরকারি টোল ফ্রি ৩৩৩ নম্বরে ৩১৬ বার, ১৬২৬৩ নম্বরে ৬৩ বার, ১০৬৫৫ নম্বরে ৪০ বার, ১০৯ নম্বরে ৩১ বার এবং ৯৯৯-এ ২৩ বার কল করে বিভিন্ন রকম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রদান করে। তার এমন কাজে সরকারি সম্পদ ও সময় যেমন অপচয় হয়েছে, তেমনি ভুক্তভোগী জনগণ সরকারি গুরুত্বপূর্ণ সেবা হতে বঞ্চিত হয়েছেন। পাশাপাশি মিথ্যা তথ্য প্রদান করায় মাঠপর্যায়ে কর্মরত পুলিশ প্রশাসনসহ দায়িত্বরত অন্যান্য সংস্থা হয়রানির শিকার হয়েছেন।‘

বিজ্ঞপ্তিতে অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলা হয়, আপনাদের সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখুন। তারা যেন মোবাইলের অপব্যবহার করে এ রূপ বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রদান না করে।’

আটক ওই কিশোরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হয়েছে বলেও জানানো হয়।

রেজাউল করিম রেজা/এমএআর/পিআর