ফুলপুরের ২ বীরাঙ্গনার স্বীকৃতিতে পরিবারে আনন্দ
দীর্ঘ ৪৪ বছর পর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়ায় ময়মনসিংহের ফুলপুরের দুই বীরাঙ্গনা হালিমা খাতুন ও ময়মনা খাতুনের পরিবারে বইছে আনন্দের জোয়ার।
বর্তমান সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্তে ফুলপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাকাগাঁও গ্রামের মৃত ইছব আলীর (হাছু) স্ত্রী মোছা. হালিমা খাতুন ও ফতেপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের স্ত্রী ময়মনা খাতুন বীরাঙ্গনা থেকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি লাভ করেছেন। এ সংবাদ জানার পর থেকেই তাদের পরিবারে বইছে আনন্দের জোয়ার।
বুধবার নাকাগাঁও গ্রামের বীরাঙ্গনা মোছা. হালিমা খাতুনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে। আত্মীয় স্বজনরা এবং যারা এতোদিন তার কোনো খোঁজ খবর নিতেন না তারও শুভেচ্ছা জানাতে এসেছেন তার বাড়িতে। খবর জানতে গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা গেছে।
এ ব্যাপারে বীরাঙ্গনা মোছা. হালিমা খাতুনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে, তিনি বর্তমান সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ সম্মাননা অতীতের সব দুঃখ, গ্লানি ও অপবাদ দূর করে দিয়েছে।
সংসার জীবনে তার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। অসুস্থতার কারণে প্রায় ২০ বছর আগে তিনি শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পরিবারের সদস্যরা অন্যের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। বড় মেয়ে খোদেজা খাতুনের জামাই নুরুল ইসলাম জানান, তিনি ঢাকায় কাজ করে শাশুড়িসহ তার সংসারের খরচ বহন করেন।
ফতেপুর গ্রামের বীরাঙ্গনা ময়মনা খাতুনকে বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি। বর্তমানে তিনি গাজীপুর জেলার বাহার মার্কেটের একটি গার্মেন্টেস এ কাজ করেন। তার ২ মেয়ে রয়েছে। শুধুমাত্র তার একটি টিনের চালার ভিটে বাড়ি রয়েছে। এ ব্যাপারে মুঠোফোনে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, দেরিতে হলেও বর্তমান সরকার আমাদের যে সম্মাননা দিয়েছে এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।
ফুলপুরস্থ মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ও ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য এটিএম রবিউল করিম জাগো নিউজকে জানান, আমাদের প্রচেষ্টায় ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর ও হালুয়াঘাট উপজেলার ৪জন বীরাঙ্গনাকে বের করতে সক্ষম হয়েছিলাম। তারা আজ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়ায় আমিও আনন্দিত।
এসএস/এমএস