ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মুকুল আশা জাগালেও ভাবাচ্ছে করোনা

বেনাপোল (যশোর) | প্রকাশিত: ০৯:৪০ পিএম, ১২ এপ্রিল ২০২০

যশোরের আম বাগানগুলোতে এখন মুকুলের সমারোহ। এটি দেখে এ বছর আম উৎপাদন রেকর্ড গড়বে বলে আশা করছেন চাষিরা। মুকুল রক্ষায় গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত এ অঞ্চলের চাষিরা। পোকা ও ছত্রাকের আক্রমণ থেকে ফলন রক্ষায় দফায় দফায় কীটনাশক দিচ্ছেন গাছে। তবে এখন তাদের একটাই চিন্তা করোনা। এ মহামারি কাটিয়ে উঠতে পারলে ভালো লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা করছেন তারা।

আমচাষি শার্শার ইসরাফিল হোসেন মন্টু বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে আমরা আতঙ্কিত। তারপরও এখনই মুকুল রক্ষা করার সময়। পোকা ও ছত্রাকের হাত থেকে বাগান রক্ষা করতে না পারলে আমাদের পথে বসতে হবে। সাবধানতা অবলম্বন করেই আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। করোনা ভাইরাসে দেশের পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় তা নিয়ে আম বাজারজাতকরণে দুশ্চিন্তায় আছেন বলে জানান তিনি।

শার্শার বড়বাড়িয়া গ্রামের বাগান মালিক শাহাজান আলি জানান, গত বছরের তুলনায় গাছগুলোতে মুকুল বেশি এসেছে। তবে বেশ কিছুদিন থেকে তার গাছগুলোতে ‘হপার’ নামের এক ধরনের পোকার আক্রমণ লক্ষ্য করছেন। তাই তিনি গাছে কীটনাশক দিচ্ছেন।

সামটা গ্রামের জহুরুল হক জলুর রয়েছে ২৫ বিঘার নিজস্ব আম বাগান। নিজেই জোন-মুজুরি দিয়ে পরিচর্যা করেন বাগানগুলো। জলু বলেন, প্রতিবছর আমের মুকুল দেখে লাভের আশায় বুক বাধেন। কিন্তু নানা কারণে মুকুল ঝরে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত তেমন একটা লাভ হয় না তার। এ বছর নিয়মিত গাছের পরিচর্যা করেছেন। বিশেষ করে ‘হপার’ পোকা ও ছত্রাকের আক্রমণের হাত থেকে মুকুলকে রক্ষা করতে কয়েক দফা তরল কীটনাশক স্প্রে করিয়েছেন তিনি।

গোলাম আজম, শাহাজান আলি, দেলোয়ার হেসেন, বড়বাড়িয়ার শাজাহান আলি, নাভারনের রবিউল ইসলামসহ একাধিক আমচাষি ও ব্যবসায়ী বলেন, অন্যান্য বছরের মতো এবারও তারা প্রতিটি বাগান মালিককে অগ্রিম ৩০-৪৫ হাজার টাকা দিয়ে এক বিঘার একটি করে বাগান কিনেছেন। পরিচর্যায় বিঘা প্রতি আরও ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এক বিঘার একটি বাগান থেকে কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা লাভ হবে। বিঘা প্রতি এক লাখ টাকা পর্যন্ত আম বিক্রি করা সম্ভব বলেও মনে করছেন এই আমচাষিরা।

jagonews24

পঁচিশ লাখ টাকা বিনিয়োগে ৫০ বিঘার ২৫টি আমবাগান লিজ নিয়ে বছর শেষে সাড়ে সাত থেকে আট লাখ টাকা লাভের স্বপ্ন দেখছেন জামতলার আমচাষি গোলাম আজম। তিনি বলেন, এ বছর আম গাছগুলোতে প্রচুর মুকুল আসায় এ অঞ্চলে আমের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। তবে করোনা পরিস্থিতিতে দেশের বাজার কোন অবস্থায় যায় তা নিয়ে আমরা চিন্তিত।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর এই অঞ্চলের গাছগুলোতে প্রচুর মুকুল এসেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বিভিন্ন ধরনের পোকার আক্রমণ থেকে মুকুল রক্ষা করা গেলে আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

শার্শা উপজেলায় এক হাজারেরও বেশি আমচাষি অন্তত তিন হাজার বিঘা জমিতে এবার আমচাষ করেছেন বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। হিমসাগর, লেংড়া, ফজলি, গোপালভোগ, আম্রোপালি ও মল্লিকা জাতের ২৭৫টি আমের বাগান শার্শা উপজেলায় আছে বলে জানান কৃষিবিদ সৌতম।

সৌতম বলেন, মুকুল ধরে রাখা, গুটি আনা, গুটি ঝরা বন্ধ করা ও গুটিকে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষায় আমচাষিরা বিরামহীনভাবে পরিচর্যা করছেন। আমের কারবার নিয়ে এই অঞ্চলের ২০ হাজার মানুষের মৌসুমী কর্মসংস্থান হয়ে থাকে।

জামাল হোসেন/এফএ/এমকেএইচ