ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কেউ খোঁজ রাখেনি বিধবাপল্লীর

জেলা প্রতিনিধি | শেরপুর | প্রকাশিত: ১০:১২ পিএম, ১০ এপ্রিল ২০২০

শেরপুরে করোনার ভয়াল থাবা পড়েছে। এতে স্থবির হয়ে আছে জনজীবন। কর্মহীন হয়ে পড়েছে জেলার বেশিরভাগ মানুষ। অনেকেই নিম্ন আয়ের কর্মহীনদের খোঁজ নিলেও এখনো কোনো সহায়তা পৌঁছায়নি নালিতাবাড়ীর সোহাগপুর বিধবাপল্লীতে। সংকটময় এই মুহূর্তে অর্ধাহারে অনাহারে রয়েছেন ৭১’র যুদ্ধে অংশ নেয়া বিধবাপল্লীর বীরাঙ্গনা বিধবারা।

১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই পাকবাহিনী হামলা চালায় এই সোহাগপুরে। গুলি করে হত্যা করে ১৮৭ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে। বিধবা হন ৬২ জন গৃহবধূ। ২০০৭-০৮ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৯ পদাতিক ডিভিশনের তালিকা অনুযায়ী বর্তমানে বেঁচে আছেন ২৭ জন বিধবা। সরকারের সকল সুযোগ পেলেও করোনা ভাইরাসের প্রভাবে এখন স্থবির তাদের জীবন।

দু’জন করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর লকডাউন করা হয়েছে দুটি গ্রাম। অঘোষিত লকডাউন শুরু হয়েছে জেলাজুড়ে। এতে কর্মজীবী স্বজনদের কাজ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন এখানকার বীরাঙ্গনা বিধবারা। এই পল্লীতে এখনও সরকারি, বেসরকারি বা কোনো এনজিও, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে খাদ্রসামগ্রী পৌঁছায়নি। এতে অনেকেই অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন তারা।

সোহাগপুর বিধবাপল্লীর বাসিন্দা শহীদ শুকুর মামুদের স্ত্রী ফরিদা বেওয়া বলেন, ‘আমরা খাওনের জন্য মরতাছি, আমাদের এখানে কেউ আসে না। ঘরে চাল, ডাল কিছুই নেই। আমরা পাশের বাড়িতে হাওলাদ করে খাচ্ছি।’

একই এলাকার শহীদ ইব্রাহিমের স্ত্রী হাবিজা বেগম ও সিরাজ আলীর স্ত্রী শমলা বেওয়া বলেন, ‘কত কত জায়গায় শুনতাছি, টিভিতেও দেখতাছি সরকার চাল, ডাল, সাবান, তেলসহ অনেক কিছু দিচ্ছে কিন্তু আমাদের এখানে কেউ আসে নাই। আমরা খুব কষ্টে আছি।’

বিধবাপল্লীর বাসিন্দা রহমত আলী ও সোহাগ মিয়া বলেন, আমরা খুব হতাশ। সরকার এই বিধবাদের জন্য কি না করেছে। ইতোমধ্যে প্রতিজনের জন্য একটি করে বিল্ডিং ঘর স্থাপন করে দিয়েছে। ভাতাও পাচ্ছেন। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রভাবে কেউ ঘর থেকে বের হতে না পারায় ও ছেলেরা কর্মহীন হয়ে পড়ায় এই পল্লীর বিধবারা খুব কষ্টে আছেন। এখানে কেউ কোনো সহযোগিতা করেনি।

সোহাগপুর বিধবাপল্লীর শহীদ পরিবার কল্যাণ সমিতির সভাপতি জালাল উদ্দিন বলেন, এই সংকটপূর্ণ মুহূর্তে সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে বিধবাপল্লীতে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করার জন্য আমি অনুরোধ করছি। তারা আসলেই খুব কষ্টে আছেন।

নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে শহীদ জায়া ও বীরাঙ্গনাদের কাছে সরকারি খাদ্রসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হবে।

ইমরান হাসান রাব্বী/এফএ/জেআইএম