স্বেচ্ছায় লকডাউনের হিড়িক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে শরীয়তপুরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় স্বেচ্ছায় লকডাউনের হিড়িক পড়েছে। বিভিন্ন গ্রামের পাড়া-মহল্লার প্রবেশপথে রশি, বাঁশ ও গাছের গুঁড়ি ফেলে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। কিছু কিছু সড়কে লেখা রয়েছে, ‘এই এলাকা লকডাউন করা হলো।’
জেলার ডামুড্যা উপজেলার মডের কান্দি, মোল্লাকান্দি, দশমনতারা, আকালবরিশ, বাদুরিকান্দি, গোসাইরহাট উপজেলার নলমুড়ি, চর ভুয়াই, দাশের জঙ্গল, লাকাচুয়া, জাজিরা উপজেলার রশের মোড়, চরধুপুর, গঙ্গানগর ছাব্বিশ পাড়া, নড়িয়া উপজেলার ঘড়িসার পাগলার মোড়, বাড়ৈপাড়া, জালিয়ারহাটি, ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরের কাশেমপুর, চেয়ারম্যান বাজার, হকপুর এবং সদর উপজেলার স্বর্ণঘোষ, মধ্য সোনামুখিসহ পৌরসভাগুলোর বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে রাস্তায় রশি ও গাছের গুড়ি এবং বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে।
ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের মডের কান্দি এলাকায় দেখা যায়, এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে গ্রামের প্রবেশপথে সেতুর ওপরে বাঁশের বেড়া দিয়ে ব্যারিকেড দিয়েছেন। সামনে রঙ দিয়ে বড় অক্ষরে লিখে দেয়া হয়েছে, ‘মডেরকান্দি লকডাউন করা হলো।’
ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, করোনা মহামারি থেকে বাঁচতে বাইরে থেকে কোনো লোক যাতে এলাকায় প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য লকডাউন করা হয়েছে। এলাকার লোক ছাড়া বাইরের কোনো লোক ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না। তবে এলাকা থেকে কেউ জরুরি প্রয়োজনে বাজার করতে আসলে তাদেরকে পাঁচ মিনিটের বেশি অবস্থান করতে দেয়া হয় না।
ধানকাঠি এলাকার বাসিন্দারা জানান, এলাকার তরুণরা বিভিন্ন স্থানে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়েছেন। পাড়ার কেউ বাজার থেকে ফিরলে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার লাগিয়ে গ্রামে প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া মাইকিং করে সচেতনতা বাড়াচ্ছেন তরুণরা।
ভেদরগঞ্জ উপজেলার উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনুস সরকার বলেন, স্থানীয়রা বিভিন্ন এলাকার প্রবেশপথে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে এলাকা সুরক্ষার চেষ্টা করছে। যেন বহিরাগত লোক প্রবেশ না করে। পাশাপাশি ইউনিয়নের বাজারগুলোতে যাতে প্রবেশ না করতে পারে সেজন্য সড়কের ওপর বাঁশ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারের নির্দেশ মানার জন্য সবাইকে সচেতন করা হচ্ছে।
শরীয়তপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুর রশিদ সরদার বলেন, সড়কের মুখে গাছের গুঁড়ি, বাঁশের বেড়া দিয়ে যে লকডাউন করা হচ্ছে এটি অনিয়ন্ত্রিত। আমি এর পক্ষে নই। এর কারণে অনেকে হয়রানির মুখে পড়বেন। এতে রোগী কিংবা জরুরি কাজে আস লোকজন বাধার মুখে পড়বেন।
তিনি আরও বলেন, শরীয়তপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পৌর এলাকায় সচেতনতা লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে এবং জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। ঘরবন্দি গরিব ও দুস্থ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করছেন মেয়র।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর আল নাসীফ বলেন, আমাদের এ ধরনের লকডাউনের কোনো নির্দেশনা নেই। এতে সাধারণ মানুষ জরুরি যোগাযোগের প্রয়োজনে নানা বাধার সম্মুখীন হবে। এজন্য স্থানীয়দের স্বেচ্ছায় লকডাউন করতে বারণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি সবাইকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে।
মো. ছগির হোসেন/এএম/জেআইএম