ব্যস্ত সময় পার করছে নওগাঁর কারিগররা
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহোৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে প্রতিমা তৈরিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর কারিগরিা। কাঁদা, মাটি, খড়-কাঠ দিয়ে প্রলেপ এবং শুকানো নিয়েই এখন দিন-রাত কাটছে তাদের।
দিন যতই এগিয়ে আসছে ব্যস্ততা ততই বেড়ে চলছে। তাই প্রতিমা ও এর প্রত্যেকটির অনুষঙ্গ তৈরি, নিখুঁতভাবে কাজ ফুটিয়ে তুলতেই এখন সর্বোচ্চ মনোযোগ তাদের। প্রতিমা তৈরির খড়-কুটা, বাঁশ, সুতা, রশি, মাটি আনুষঙ্গিক কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার লাভ একটু কম হবে বলে জানান কারিগররা।
নওগাঁ শহরের কালীতলা মহল্লায় প্রসেনজিৎ, রনজিন, মোহন, মিঠুন, উজ্জ্বল, গৌতম ও নারায়ণ চন্দ্র এই সাতজনের কারিগর দল ১৭ সেট প্রতিমা তৈরি করছেন। প্রতিমাগুলোর আস্তর শুকানোর জন্য রোদে দেয়া হয়েছে। সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য প্রতিমায় মাথা, হাতের আঙ্গুলসহ বিভিন্ন উপকরণগুলো যুক্ত করা হচ্ছে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে প্রতিমাগুলোর কারুকাজ সম্পূর্ণ করে মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
কারিগর প্রসেনজিৎ জাগো নিউজকে জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার প্রতিমা তৈরির কাঁচামালের দাম একটু বেড়ে গেছে। গত বছর এক গাড়ি মাটির দাম ২শ টাকা ছিল। এবার এক গাড়ি মাটি ২৫০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে। গতবার শাড়ি ১শ টাকায় কিনলেও এবার তা ১২০টাকায় কিনতে হয়েছে। এছাড়া রং, তুলিসহ অন্যান্য দামও বেড়ে গেছে।
আরেক কারিগর রনজিন জাগো নিউজকে জানান, এবার ১৭ সেট প্রতিমা তৈরির অর্ডার নিয়েছেন। প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। ক্রেতার চাহিদা ও পছন্দ অনুযায়ী ২০ হাজার টাকা থেকে ৪৫ হাজার টাকায় অর্ডার নিয়েছে। আগামী দুই-তিনদিনের মধ্যে কারুকাজ সম্পূর্ণ হবে। এরপর মণ্ডপে মণ্ডপে পৌঁছে দেয়া হবে।
উজ্জ্বল জানান, বাপ দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতিমা তৈরির কাজ করি। অনেক কষ্টের মাঝেও পেশাকে ধরে রেখেছি। বছরের এ মৌসুমে প্রতিমা তৈরি করে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার ঠিকমত চলে না। এজন্য পাশাপাশি পানের একটা ছোট দোকান এবং রিকশা-ভ্যানও চালাতে হয়।
জেলা পূজা উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা যায়, শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে নওগাঁয় ৭১৯টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সবগুলো মণ্ডপ যাতে সুষ্টু ও শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় উৎসব পালন করতে পারে সেজন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।
আব্বাস আলী/এসএস/এমএস