ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

করোনার ঝুঁকিতে থেকেও ৭৫০ পরিবারের জন্য ত্রাণ পাঠালেন প্রবাসী

জেলা প্রতিনিধি | যশোর | প্রকাশিত: ০৯:০৫ পিএম, ০৪ এপ্রিল ২০২০

করোনা ঝুঁকির মধ্যে মালয়েশিয়ায় জীবন-যাপন করছেন যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ইত্যা গ্রামের জসিম উদ্দিন। প্রবাসে থেকেও উপজেলার কাশিমনগর ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের কর্মহীন ৭৫০টি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। স্বজনদের মাধ্যমে দরিদ্রদের ঘরে ঘরে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। প্রবাসে থেকে এলাকার মানুষের জন্য এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

শনিবার (০৩ এপ্রিল) দুপুরে ইত্যা গ্রামের ঋষিপাড়া মন্দিরের পাশে দ্বিতীয় দিনের মতো তা অনুদানের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় ঋষিপাড়ার ৬৩ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সাত কেজি চাল, এক কেজি ডাল ও আধা কেজি তেলের একটি করে প্যাকেট বিতরণ করা হয়।

ত্রাণ বিতরণে উপস্থিত ছিলেন কাশিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম আহাদ আলী, পুলিশপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক, প্রবাসী জসিম উদ্দিনের বাবা মো. জয়নাল মোড়ল ও জসিমের ভাই মো. মহিউদ্দিন প্রমুখ।

ত্রাণের প্যাকেট পেয়ে ঋষিপাড়ার বাসিন্দা রেখা রানী বলেন, আমি ইত্যাবাজার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করি। দোকানদাররা কিছু পয়সা দেয়। তাতেই আমার পাঁচজনের সংসার চলছিল। কিন্তু ১০-১২ দিন ধরে বাজার বন্ধ। কোনো কাজ নেই। না খেয়ে আছি। এই প্রথম কেউ ত্রাণ সহয়তার খাবার দিল। এতে কমপক্ষে তিনদিন চলবে আমাদের।

ভ্যানচালক বেত কুমার দাস বলেন, বাইরে মানুষজন নেই। ভাড়াও হচ্ছে না ভ্যানের। এজন্য ১০ দিন ধরে বাড়ি থেকে ভ্যান বের করিনি। ঘরে খাবার নেই। জসিমের দেয়া চাল-ডালে তিনদিন সংসার চালানো যাবে। আমিও এই প্রথম খাদ্য সহায়তা পেলাম।

‘প্রবাসী জসিম উদ্দিনের পক্ষে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ’ এমন লেখা একটি ব্যানার পিকাপের সামনে লাগিয়ে গত শুক্রবার থেকে গ্রামে গ্রামে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। আগামীকাল রোববার বিতরণকাজ শেষ করা হবে। গত দুইদিনে ৬২৫টি পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।

jagonews24

প্রবাসী জসিম উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, ১৯ বছর ধরে আমি মালয়েশিয়ায় আছি। বিদেশে থাকলেও মন পড়ে থাকে গ্রামে। এলাকার মানুষের যেকোনো সংকটে আমি এগিয়ে যাই। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্যে সরকার দোকানপাট, বাজার, পরিবহন সবকিছু বন্ধ রেখেছে। এতে দরিদ্র মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। যে কারণে আমার পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের কর্মহীন দরিদ্র মানুষের তালিকা তৈরি করে প্রত্যেকটি পরিবারে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। প্রবাসে থাকলেও দেশের মানুষের জন্য মায়া লাগে, মন কাঁদে।

কাশিমনগর ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আহাদ আলী বলেন, সরকারি বরাদ্দ আসছে একাবারেই সীমিত। আমার ইউনিয়নে সরকারি বরাদ্দের চাল এ পর্যন্ত মাত্র ২০টি পরিবারে দেয়া সম্ভব হয়েছে। জসিম উদ্দীনের মতো মানুষ এগিয়ে না এলে করোনা দুর্যোগ মোকাবিলা করা সরকারের একার পক্ষে অত্যন্ত কঠিন। জসিমের পক্ষে ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের ৭৫০টি দরিদ্র পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। দরিদ্র পরিবারের তালিকা তৈরি করতে ইউপি সদস্যদের কাজে লাগানো হয়েছে। ফলে অত্যন্ত সুন্দরভাবে ত্রাণসামগ্রী বিতরণের কাজ চলছে।

মিলন রহমান/এএম/এমকেএইচ