ধরেই নিলাম ওরা ফটোসেশন করছে, করুক না
ধরেই নিলাম ওরা ফটোসেশন করছে, করুক না। এ কাজটাই বা আমরা কতজন করতে পারছি। নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো হিম্মত কজনের হয়। সেই সকালে দুটো নাস্তা খেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়, সারাদিন আর কোনো খবর নেই। বাসা থেকে ফোন এলে কাজের ব্যস্ততার কারণে যতটুকু সম্ভব নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিয়ে রেখে দেয়া। হয়তো এর জন্য পরিবারের সদস্যদের কাছে থেকে বকাঝকা শুনতে হয়েছে। তবুও ওরা অবিচল ওদের কাজে। কিছু একটা করতেই হবে, এটাই ওদের ধ্যান।
পরশু ঠিক দুপুর তিনটার দিকে যখন বেতপট্টি দিয়ে বাসায় ফিরছি হঠাৎ ভাইয়া বলে কেউ যেন ডাকল। মোটরসাইকেল হালকা করে ফিরে দেখি ফুটপাতের পাশে একটা বন্ধ দোকানের সিঁড়িতে ওরা কজন বসে আছে। ছুটে চলে এলো কাছে। একনজর ওদের দেখেই বুঝতে পারলাম ওদের পরিশ্রমের ধকলটা। আমার বিশ্বাস রোদে এই সময় অবধি ওদের পেটে কিছুই পরেনি।
বললাম, তোমরা এভাবে কাজ করলে অসুস্থ হয়ে পড়বে। আর তাছাড়া তোমাদের পারসোনাল প্রোটেকশন তেমন দেখছি না। ওরা হেসে বলল, আমরা ঠিক আছি। কিন্তু ভাইয়া তোমার অন্তত মাস্ক পড়া উচিত।
সীমান্ত , সুবা, রিপ্তি, শ্রেয়শ্রী, আসিফ ইমরান, হিমাংশু, শুভ, অনিমা, কামরান ওরাসহ মোট আঠাশ জন স্টুডেন্ট গত পাঁচ-ছ দিন রংপুর মহানগর দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে হ্যাঁ, পারিবারিক সম্মতিপত্র নিয়ে এগিয়ে এসেছে ওরা।
ওদের একটা প্লাটফর্ম আছে "We for them". সত্যিই এ নামের মধ্যেই খুঁজে পাওয়া যায় ওদের সামাজিক কমিটমেন্ট। চলুন না আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাই ওদের পাশে একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে।
শুক্রবার বিকেলে নিজের ফেসবুক ওয়ালে কয়েকটা ছবিসহ এভাবেই ওদের বর্ণনা তুলে ধরেছেন সেরাফুল হোসেন হিমেল নামে এক ব্যক্তি। আর এতে কমেন্ট করে প্রশংসা ও সাহস যুগিয়েছেন আরও কয়েজন।
গোলাম মোস্তফা নামে একজন লিখেছেন 'তারুণ্যের শক্তি ও সততা এখানেই পরিস্ফুট! হ্যাটস অফ ফর ইউ, মাই বয়েজ!'
আজাদ কালাম লিখেছেন 'ভালো কিছু অবশ্যই প্রশংসনীয়। ওদের সৎকর্ম ওদেরকে ভালোভাবে বাঁচতে শেখাবে। এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ট সময়।
সত্যিই তো ছবিগুলো দেখলেই বোঝা যায় কী করছে না, ওরা। দোকানের সামনে বৃত্ত আঁকা, জীবাণুনাশক স্প্রে, ঝাড়ু হাতে রাস্তা পরিষ্কার, সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি-সবটাই করছেন।
আর তাইতো ফারহানা পারভেজ নামে একজন লিখেছেন, বেঁচে থাকো তোমরা যুগ যুগ। তোমাদের মতো সন্তান আমাদের দেশের জন্য দরকার।
জীতু কবীর/এমএএস/এমএস