ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মিয়ানমার থেকে ফিরলো আরও ১০৩ বাংলাদেশি

প্রকাশিত: ১০:২৪ এএম, ১২ অক্টোবর ২০১৫

মিয়ানমারের জলসীমা থেকে আটক অভিবাসী প্রত্যাশীদের মধ্যে থেকে ষষ্ঠ দফায় ১০৩ জন বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সোমবার বেলা দেড়টায় ঘুমধুম সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকার বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সেতু দিয়ে তাদের ফেরত আনা হয়।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কক্সবাজার-১৭ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর ইমরান উল­াহ সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রথম থেকে ষষ্ঠ দফায় ৭৩ জনকে ফেরত আনার কথা থাকলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মতে বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত আরো ৩০ জনের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিজিবি সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘুমধুম সীমান্তের জিরো পয়েন্টের বিপরীতে মিয়ানমারের ঢেঁকিবনিয়ায় ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনাল রেজিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলের এক পতাকা বৈঠক হয়। বৈঠকে অংশগ্রহণ করতে বিজিবির মেজর ইমরান উল­াহ সরকারের নেতৃত্বে ২১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মিয়ানমার যান। ওই দলে বিজিবির প্রতিনিধি ছাড়াও জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, চিকিৎসক, ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রতিনিধিরা ছিলেন।

Miyanmar

প্রতিনিধি দলে পর্যবেক্ষক হিসেবে ছিলেন, বিজিবি কক্সবাজার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এম এম আনিসুর রহমান।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সেতুর বাংলাদেশ অংশে এক যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে বিজিবি কক্সবাজার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এম এম আনিসুর রহমান বলেন, মিয়ানমারের জলসীমায় উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে আরও ৬০ জন বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। তাদের ফেরত আনার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে কার্যক্রম চলছে।

মিয়ানমারের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সীমান্তে উগ্রপন্থীরা যাতে কোনো গোলযোগ সৃষ্টি করতে না পারে সেই ব্যাপারে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে সহায়তা চাওয়ার কথাও তিনি সাংবাদিকদের জানান।

ব্রিফিংয়ে মিয়ানমারের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনাল রেজিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালক চ নাইং উদ্ধারকৃতদের ফেরত আনায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। আগামীতেও বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে হৃদ্যতাপূর্ণ এ সম্পর্ক বজায় রাখতে সকলকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ন্যাশনাল প্রোগাম অফিসার আসিফ মুনীর জানান, ফেরত আনা ১০৩ বাংলাদেশিকে আইওএমর পক্ষ থেকে বাড়ি পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত খাদ্য, চিকিৎসা ও যাতায়াত খরচসহ সব ধরনের মানবিক সহায়তা দেয়া হবে।

Miyanmar-Retarn

তিনি আরো জানান, ফেরত আনা ১০৩ জন ১৭টি জেলার বাসিন্দা। এদের মাঝে বগুড়া জেলার ৩১ জন রয়েছে। ফেরতকৃতদের মধ্যে ছয় শিশু-কিশোর রয়েছে বলেও উল্লে­খ করেন তিনি।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) শ্যামল কুমার নাথ জানান, মিয়ানমার থেকে ১০৩ জনকে ঘুমধুম সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সেতু দিয়ে দুপুরে দেশের অভ্যন্তরে ফেরত আনা হয়। এরপর তাদের চারটি বাসে করে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আনা হয়। সেখানে ইমিগ্রেশন সংশ্লিষ্ট কাজ শেষ করে তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এরপরই তাদের বাড়িতে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ২১ মে মিয়ানমারের জলসীমা থেকে সাগরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার হয় ২০৮ জন এবং ২৯ মে আরো ৭২৭ জন অভিবাসী প্রত্যাশীদের উদ্ধার করে দেশটির নৌ-বাহিনী। উদ্ধার হওয়া এসব অভিবাসন প্রত্যাশীদের প্রথম থেকেই বাংলাদেশি নাগরিক বলে দাবি জানিয়ে আসছিল মিয়ানমার।

পরে বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্তদের মধ্যে গত ৮ ও ১৯ জুন, ২২ জুলাই এবং ১০ ও ২৫ আগস্ট পাঁচ দফায় ৬২৬ জনকে দেশে ফেরত আনা হয়। ষষ্ঠ দফায় আনা ১০৩ জনসহ এ পর্যন্ত দেশে ফেরত আনা হয়েছে ৭২৯ জনকে।

সায়ীদ আলমগীর/এআরএ/পিআর